দেবতাদের বড় খোলা মন। তাই ইন্দ্র যখন দেখিলেন যে তিনি কিছুতেই কৃষ্ণ আর অর্জুনকে আঁটিতে পারিতেছেন না, তখন তিনি যারপরনাই সন্তুষ্ট হইয়া তাঁহাদিগকে প্রশংসা করিতে করিতে চলিয়া গেলেন৷
তখন খাণ্ডব বন পোড়াইতে কোনো বাধাই রহিল না। সেই ভয়ানক আগুনের হাত হইতে কেবল ছয়টি প্রাণী রক্ষা পাইয়াছিল৷
এই ছয়টির একটি অবশ্য অশ্বসেন, আর-একটি ময় নামক দানব। এই ব্যক্তি হাত জোড় করিয়া অর্জুনকে এমনি মিনতি করিতে লাগিল যে, অর্জুন দয়া করিয়া তাহাকে ছাড়িয়া দিলেন৷
আর চারিটি প্রাণী চারিটি বকের ছানা। ইহাদিগকে অগ্নি দয়া করিয়া পোড়ান নাই৷
খাণ্ডব বন খাইয়া অগ্নির অসুখ ছাড়িয়াছিল কি না, তাহা মহাভারতে লেখা নাই। সে যাহা হউক, তিনি ভোজন শেষ করিয়া বড়ই আনন্দিত হইলেন। ইন্দ্র যে কৃষ্ণ আর অর্জুনের উপর খুব খুশি হইয়াছিলেন, এ কথা তো আগেই বলিয়াছি। তিনি বলিলেন, “তোমরা যাহা করিলে দেবতারাও তাহা করিতে পারেন না। এক্ষণে তোমরা কি বর চাও?”
তাহাতে অর্জুন বলিলেন, “আমাকে সকলরকম অস্ত্র দিন, এই আমার প্রার্থনা৷”
ইন্দ্র বলিলেন, “তুমি তপস্যা করিয়া শিবকে তুষ্ট কর। তাহা হইলেই আমি অস্ত্র দিব৷”
কৃষ্ণ বলিলেন, “অর্জুনের সহিত আমার বন্ধুতা যেন চিরদিন থাকে৷”
ইন্দ্র বলিলেন, “তথাস্তু৷” (অর্থাৎ “তাহাই হউক”)৷
তারপর অগ্নি, কৃষ্ণ আর অর্জুনের অনেক প্রশংসা করিয়া সেখান হইতে চলিয়া গেলেন, আর কৃষ্ণ, অর্জুন এবং ময়দানব যমুনার ধারে বসিয়া কথাবার্তা বলিতে লাগিলেন৷
উপেন্দ্র-২৭