পাতা:অক্ষয়-সুধা - অক্ষয়কুমার দত্ত.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১lo•, ) আমরা দেশকে হঠাৎ ভালবাসিয়া ফেলিলাম। এই ভালবাস সকল সময়ে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অগ্রসর হন্দু নাই এবং ভালবাসা বা প্রেম সাধারণতঃ চকুয়ান্ নহে। স্বৰ্গীয় রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী মহাশয় স্বর্গীয় রজনীকান্ত গুপ্ত সম্বন্ধে লিথিয়াছেন যে, বিদেশীয় ঐতিহাসিকগণ আমাদের ইতিহাসে। অযথা কলঙ্ক লেপন করিয়াছে—আর গুপ্ত মহাশয় সেই কলঙ্ক মুক্ত করিবার। জষ্ঠ্য লেখনী ধারণ করিয়াছিলেন। অবখ্য যে কলক অযথা, তাহার ক্ষালন করা উচিত। কন্তু আমার দেশের শাস্ত্র, ধর্ম্ম বা ইতিহাসের বিরুদ্ধে যখন কিছু বলা হইয়াছে, তখন বুঝি বা না বুঝি তাহার প্রতিবাদ করিখ এই প্রকারের প্রবৃত্তি ঘদি কোনও লেখকের ভিতর জাগিয়া উঠে, তাহ৷ হইলে আমরা বলিতে বাধ্য যে তান বৈজ্ঞানিকের ভূমি হইতে স্থলিত হইখা ভাবুকতার পিচ্ছিলপথে নিপতিত হইয়াছেন। বৈজ্ঞানিক ও ভাবুক-এই উভয়ের মধ্যে যেটুকু প্রভেদ তাহা মনে রাখা আবশ্যক। প্রেম আমাদিগকে অনেক সময়েই অন্ধ করে এবং প্রেমিক হইতে গিয়া আমরা অনেক সময়ে সত্যভ্রষ্ট হই। স্বদেশপ্রেম অতীব প্রশংসার বিষয়। কিন্তু আজকাল অনেক মহাপুরুষের নিকট আমরা শুনিতেছি-স্বদেশ অপেক্ষা সত্য বড়। কিন্তু আমাদের দেশে সাহিত্যের ইতিহাস ভারতের দিক হইতে আলোচনা করিলে একটি স্তর দেখিতে পাওয়া যাইবে, যেন্তরে একটি কৃত্রিম বা সাময়িক উচ্ছাসময় স্বদেশপ্রেম, আমাদিগকে সত্যান্বেষণে মুদৃঢ়, সবল ও অধ্যবসায়শীল হইতে বাধ৷ দিয়াছে। এখনও আমরা প্রায়ই শুনিতে পাইতেছি যে, আমাদের দেশে বৈজ্ঞানিক সাহিত্যের শ্রীবৃদ্ধি হয় নাই। এই প্রতিক্রিয়াই তাহার কারণ। ধর্ম ও বিজ্ঞান—এই উভয়ের দ্বন্দ্বের অনেক ইতিহাস। বাহির হইয়াছে। সেই সমুদয় পাঠ করিলে আমরা বুঝিতে পারিব-বিশ্বাসে মিলয়ে বস্তু—এই সুপরিচিত নীতিসূত্র অবলম্বন করিয়া যাহারা প্রচলিত। ধর্মমত নির্বিকারে প্রাণপণ শক্তিতে ধরিয়া রহিয়াছেন, যাহারা যাবতীয়।