৩৮ অক্ষয়-সুধা বহু লক্ষ গুণ বৃহত্তর যে সমস্ত জোতিষ্মান্ মণ্ডল নভোমণ্ডলে প্রচণ্ড-বেগে। নিয়ত পরিভ্রমণ করিতেছে, তাহার বিষয় কিছুই জ্ঞাত নয়। তৎসমুদায়। জানিবার নিমিত্ত তাহার অস্তঃকরণে এক বারমাত্রও কৌতুহলশিখা উদ্দীপ্ত হয় না। দীপশিখাসদৃশ প্রতীয়মান নক্ষত্র-সমুদায় ক্ষুদ্র হউক আর বৃহৎ হউক, দূরস্থ হউক আর সমীপস্থ হউক, সে বিষয়ে অনুসন্ধান করা তাহার। নিতান্ত অকিঞ্চিৎকর বোধ হয়। এ সকল বিষয়ে তাহার ভ্রক্ষেপও নাই। বিশ্বপতির বিশ্ব-রচনা-সংক্রান্ত যে সমস্ত পরম আশ্চর্য বিষয় নিরূপিত হইয়াছে, যে সমস্ত পরম কল্যাণকর প্রাকৃতিক নিয়ম নিদ্ধারিত হইয়াছে, এবং যাবতীয় প্রাকৃতিক বিস্তার ঘাদৃশ এ-বৃদ্ধি হইয়াছে, ও কি ভৌতিক, কি, শারীরিক, কি মানসিক, সৰ্বশাস্ত্র-সম্বন্ধীয় যে সমস্ত অভিনব তত্ত্ব দিন দিন উদ্ভাবিত হইয়া, বিশ্ববিধাতার ঘশঃসৌরভ বিস্তার করিতেছে, সে সমূদায় সে ব্যক্তির গোচর ও হৃদয়ঙ্গম হইবার সম্ভাবনা নাই। নৈসর্গিক বস্তু ও নৈসগিক নিয়মের অনুশীলনে যে কিরূপ অত্যাশ্চর্য আননের অনু ভব হয়, সে জন্মাবচ্ছিরে তাহার স্বাদগ্রহণ-করণে সমর্থ হয় না। সুশিক্ষিত ব্যক্তি বুদ্ধিবৃত্তি মার্জিত ও বদ্ধিত করিয়া, পরম পবিত্র মুখাৰ্চ- হৃদয়ে যেরূপ পরমাডুত পরিশুদ্ধ জ্ঞানারণ্যে বিচরণ করেন, অশিক্ষিত ব্যক্তি স্বপ্নেও এক বার তথায় পদার্পণ করিতে পারগ হয় না। অশিক্ষিতের সে ব্যক্তি বিদ্যা-মন্দিরের দ্বারস্বরূপ ব্যাকরণবিছাকেই জ্ঞানের প্রসার যথার্থ বিদ্যা বোধ করে; জন্মপত্রিক। রচনা ও শুভাশুভ দিনক্ষণ-গণনাকেই প্রকৃত জ্যোতির্বিদ্যা বলিয়া প্রত্যয় করে; অশোঁচ ব্যবস্থা ও প্রায়শ্চিত্তবিধানকেই বাস্তবিক ধৰ্মোপদেশ বলিয়৷ বিবেচনা করে এবং মনঃকল্পিত পৌরাণিক ইতিহাসকেই ভূলোকের যথার্থ ইতিহাস বলিয়া প্রত্যয় করে। স্বদেশীয় শাস্ত্রে যে বিষয়ে যেরূপ নিয়ম নির্দিষ্ট আছে, এবং স্বদেশ-মধ্যে যে কার্য্যে যেরূপ রীতি প্রচলিত আছে, তাহাই সর্বোৎকৃষ্ট
