পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 o 8 অধ্যাপক দ্বন্দ্ব ঘনিয়ে আসবার অবকাশ পেত না, স্বন্দ্বে তার এক প্রাস্তকে টানতে না টানতেই তার ভারকেন্দ্র তাকে সোজা খাড়া করে দিত কর্ত্তব্যের দিকে । এইজন্য মঞ্জরীর সম্বন্ধে স্নেহের তন্ত্রী যদিও ধীরে ধীরে আসছিল শ্লথ হয়ে এবং যদিও ধীরে ধীরে সে অনুভব করছিল যে তার জীবনযাত্রার প্রণালী ও আদর্শের সঙ্গে মঞ্জরীর জীবনযাত্রার প্রণালী ও আদর্শের কোনও মিল নেই, তথাপি একদিন সে মঞ্জরীর সঙ্গে এমন ব্যবহার করেছিল যাতে সে মনে করার অবসর পেয়েছিল যে এমন একটা সম্বন্ধ পরস্পরের মধ্যে ঘটে উঠবে যাতে তারা চিরজীবন দেবে পরস্পরকে সঙ্গ । সেই কথাটা স্মরণ করে’ই তার চিত্ত দৃঢ় হয়ে উঠেছিল মঞ্জরী সম্বন্ধে তার কর্তব্য পালন করবার জন্য । সে অনেক সন্ধান করেছিল মঞ্জরীর, তার মনে হয়েছিল যে এ সম্বন্ধে শেষ কথা সেদিন হ’তে পারে নি, তাই তার মন স্তব্ধ হয়েছিল । যতই এগিয়ে যেতে লাগল সে আপন কাজের স্রোতে এবং যতই মঞ্জরীর সামান্য সংবাদটুকুও হয়ে উঠল একান্ত দুলভ ততই মঞ্জরীর ছায়া আসতে লাগ ল একান্ত স্নান হয়ে । কিন্তু সে কাজের মানুষ, সে এগুতে লাল তার পথে । শুধু কারণে অকারণে মাঝে মাঝে মনে হ’তে লাগল তার স্বজাতার কথা—কি অসাধারণ এই মেয়েটি অথচ মঞ্জরীর চেয়ে কত বিভিন্ন প্রকৃতির । যতই তার মন সেই দিকে টানতে চাইত ততই সে চাইত তার মুখে কাটা লাগাম দিতে । একদিকে যতক্ষণ কর্ত্তব্য স্থির হয় নি তখন পাছে মন অন্যদিকে ছুটে গিয়ে একটা বিপত্তি বাধায় সে জন্য সে সর্ব্বদা থাকৃত সজাগ ও সচেতন । এই রকম যখন চলছিল একটা দোটানা তার মনের গভীর প্রদেশের মধ্য দিয়ে, তখন একদিন সহাস্তে গিয়ে উঠল তার বসবার ঘরে স্বজাত । বললে—“আপনার সমাধি ভঙ্গ করতে এলুম,কিন্তু আমার প্রয়োজনে নয়।”