পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৪১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারপর অপু বলিল,-ভালো কথা মা-আজকাল জ্যোঠমারা কলকাতায় বাড়ি পেয়েছে যে ! সেদিন তাদের বাড়ি গেছলাম সর্বজয়ী বলে,-"তাই নাকি ?--তোকে খুব যত্নটত্ব করলে ? --কি খেতে व्नि--- অপু নানা কথা সাজাইয়া বানাইয়া বলে-সৰ্বজয়া বলে-আমায় একবার নিয়ে যাবি-কলকাতা কখনও দেখি নি, বটুঠাকুরদের বাড়ি দুদিন থেকে মাকালীর চরণ দর্শন ক’রে আসি তা হ’লে ?-- অপু বলে,-বেশ তো মা, নিয়ে যাব, যেও সেই পূজোর সময়। সর্বজয়া বলে--একটা সাধ আছে অপু, বটুঠাকুরদের দরুন নিশ্চিন্দিপুরের বাগানখানা মানুষ হয়ে যদি নিতে পারতিস ভুবন মুখুয্যেদের কাছ থেকে, vo(- w সামান্য সাধ, সামান্য আশা। কিন্তু যার সাধ, যার আশা, তার কাছে তা ছোটও নয়, সামান্যও নয়। মায়ের ব্যথা কোনখানে অপুর তাহা বুঝিতে দেরি হয় না। মায়ের অত্যন্ত ইচ্ছা নিশ্চিন্দিপুরে গিয়া বাস করা, সে অপু জানে। সৰ্পজয়া বলে,-তুই মানুষ হ’লে, তোর একটা ভাল চাকরি। হ’লে তোর বৌ নিয়ে তখন আবার নিশ্চিন্দিপুরে গিয়ে ভিটেতে কোঠা উঠিয়ে বাস করবো । বাগানখানা কিন্তু যদি নিতে পারিস-বড ইচ্ছে হয়। অপুর কিন্তু একটা কথা মনে হয়, মা আর বেশীদিন বঁাচিবে না। মায়ের চেহারা অত্যন্ত রোগ হইয়া গিয়াছে এবার, কেবল অনুখে ভুগিতেছে। মুখে যত সাস্তুনা দেওয়া, যত আশার কথা বলা-সব বলে। জানালার ধারে তক্তপোশে দুপুরের পর মা একটু ঘুমাইয়া পড়ে, অনেক বেলা পড়িয়া যায়। অপু কাছে আসিয়া বসে, গায়ে হাত দিয়া বলে,-গাঁ যে তোমার বেশ গরম, দেখি ? সৰ্বজয়া সে-সব কথা উড়াইয়া দেয়। । এ-গল্প ও-গল্প করে । বলে হ্যারে, অতসীর মা আমার কথা-টথা কিছু বলে ? অপু মনে মনে ভাবে-মা আর বঁাচবে না-বেশী দিন। কেমন যেনকেমন-কি ক’রে থাকব। মা মারা গেলে ? অনেক বেলা পড়িয়া যায়জানালার পাশেই একটা আতা গাছ। আতা ফুলের মিষ্টি ভুরভূরে গন্ধ বৈকালের বাতাসে ! একটু পোড়ো জমি। এক ঢিবি সুরকি। একটা চারা জামরুল গাছ। পুরনো বাড়ির দেয়ালের ধারে ধারে বনমূলার গাছ। কষ্টকারীর ঝাড়। একটা জায়গায় কঞ্চি দিয়া ঘিরিয়া প্রািজয়া শাকের ক্ষেত, St.