পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৬৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখাইতেছিল-অপু ভাবিল কেন এত কষ্ট করছে লীলাদি, আহা রোজ রোজ ওর এই কষ্ট, তার ওপর আমার জন্যে আর কেন কষ্ট করা ? বিদায় লইবার সময় লীলা বলিল-কিছুই করতে পারলুম না। खारे-लि যদি এত কাল পরে, কি করি বল, পরের ঘরকন্না, পরের সংসার, মাথা নিচু ক’রে থাকা, উদয়ান্ত খাটুনিটা দেখলি তো ? কি আর করি, তবুও একটা ধরে আছি। মেয়েটা বড় হয়ে উঠল, বিয়ে তো দিতে হবে ? ঐ বটঠাকুর ছাড়া আর ভরসা নেই। সন্ধেবেলাটা বেশ ভাল লাগে-দশাশ্বমেধ ঘাটে সন্ধ্যের সময় বেশ কথা হয়, পাঁচালী হয় গান হয়—বেশ লাগে। দেখিস নি ? আসিস না। আজ ওবেলা-বেশ জায়গা, আসিস, দেখিস এখন। এসো, এসো, কল্যাণ হোক --তারপর সে আবার কঁদিয়া ফেলিল-বলিল-তোদের দেখলে যে কত কথা মনে পডে-কি সব দিন ছিল-- এবার অপু অতিকষ্টে চোখের জল চাপিল । আর একটি কর্তব্য আছে তাহার কাশীতে-লীলার মায়ের সঙ্গে দেখা করা। বাঙালীটােলার নারদ ঘাটে তাদের নিজেদের বাড়ি আছে-খুজিয়া বাডি বাহির করিল। মেজ-বৌরানী অপুকে দেখিয়া খুব আনন্দ প্রকাশ করিলেন । চোখের জল ফেলিলেন । কথাবার্তা চলিতেছে এমন সময় ঘরে একটি ছোট মেয়ে ঢুকিল-বছর ছয়সাত হইবে, ফ্রক-পরা কেঁাকডো কোকড়া চুল-অপু তাহাকে দেখিয়াই বুঝিতে পারিল-লীলার মেয়ে। কি সুন্দর দেখিতে । এত সুন্দরও মানুষ হয় ? স্নেহে, স্মৃতিতে, বেদনায় অপুর চোখে জল আসিল-সে ডাক দিল-শোনা খুকী भl, «*ांना (छ । খুকী হাসিয়া পলাইতেছিল, মেজ-বৌরানী ডাকিয়া আনিয়া কাছে বসাঈয়া দিলেন । সে তার দিদিমার কাছেই কাশীতে থাকে আজকাল । গত বৈশাখ মাসে তাহার বাবা মারা গিয়াছেন-লীলার মৃত্যুর পূর্বে। কিন্তু লীলাকে সে সংবাদ জানানো হয় নাই । দেখিতে অবিকল লীলা-এ বয়সে লীলা যা ছিল তাই। কেমন করিয়া অপুর মনে পড়িল শৈশবের একটি দিনে বর্ধমানে লীলাদের বাড়িতে সেই বিবাহ উপলক্ষে মেয়ে মজলিসের কথা-লীলা যেখানে হাসির কবিতা আবৃত্তি করিয়া সকলকে হাসাইয়াছিল-সে-ই লীলাকে সে প্রথম দেখে এবং লীলা তখন দেখিতে ছিল ঠিক এই খুকীর মত অবিকল । মেজ-বৌরানী বলিলেন-মেয়ে তো ভাল, কিন্তু বাবা, ওর কি আর বিয়ে দিতে পারব ? ওর মার কথা যখন সকলে শুনবে-আর তা না জানে কেওই মেয়ের কি বিয়ে হবে বাবা ? vet e