পাতা:অভাগীর স্বর্গ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেজবৌ কহিল, আপনি দিলেই বা ও নেবে কেন ? লক্ষ্মী অপ্রতিভ হইয়া উঠিল, কহিল, জ্যাঠাইমা কি একটা হার দিতে • পারে না ? মেজবেী বলিল, তা জানিনে দিদি, কিন্তু এ কথা নিশ্চয় জানি, মা হয়ে আমি নিতে দিতে পারিনে। নিখিল, ওটা খুলে তোমার জ্যাঠাইমাকে দিয়ে যাও । দিদি, আমরা গরীব, কিন্তু ভিখিরী নই। কোন একটা দামী জিনিস হঠাৎ পাওয়া গেল বলেই দু’হাত পেতে নেব,--তা নিই নে । লক্ষ্মী স্তব্ধ হইয়া বসিয়া রহিল । আজও তাহার মনে হইতে লাগিল, পৃথিবী, দ্বিধা হও । যাবার সময়ে সে কহিল, কিন্তু এ কথা তোমার ভাশুরের কানে যাবে মেজবেী মেজবেী বলিল, তঁর অনেক কথা আমার কানে আসে, আমার একটা কথা তার কানে গেলে কান অপবিত্র হবে না । লক্ষ্মী কহিল, বেশ, পরীক্ষা করে দেখলেই হবে । একটু থামিয়া বলিল, আমাকে খামক অপমান করার দরকার ছিল না মেজবৌ { আমি ও শান্তি দিতে জানি । মেজবৌ বলিল, এ আপনার রাগের কথা । নইলে আমি যে আপনাকে অপমান করিনি, শুধু আমার স্বামীকেই খামক অপমান করতে আপনাকে দিইনি-এ বোঝাবার শিক্ষা আপনার আছে । লক্ষ্মী কহিল, তা আছে, নেই শুধু তোমাদের পাড়াগেয়ে মেয়ের সঙ্গে র্কোন্দল করবার শিক্ষা । মেজবীে এই কটুক্তির জবাব দিল না, চুপ করিয়া রহিল। লক্ষ্মী চলিতে উদ্যত হইয়া বলিল, ওই হারটুকুর দাম যাই হােক, ছেলেটাকে স্নেহবশেই দিয়েছিলাম, তোমার স্বামীর দুঃখ দূর হবে ভেবে দিইনি। মেজবেী, বড়লোক মাত্রেই গরীবকে শুধু অপমান করে বেড়ায়, এইটুকুই কেবল শিখে রেখেচ, ভালবাসতেও যে পারে, এ তুমি r