পাতা:অমৃত-দ্বীপ - হেমেন্দ্রকুমার রায় (১৯৪০).pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
অমৃত-দ্বীপ
২১

সভায় চাঁদ হাসবে, আর নতুন জ্যোৎস্নার ঝল্‌মলে আলো মেখে স্বপ্নবালারা আসবে যেন সেই ফুলদার ঘাস-গালিচার উপরে বসে ঝরণার কলগান শুনতে!

 বিমল এই-সব দেখতে দেখতে একটি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললে, “সহর আর সভ্যতা ছেড়ে পৃথিবীর যেখানেই যাই সেখানেই দেখি, রেখায় রেখায় লেখা আছে সৌন্দর্য্যের কবিতা ৷ সহরে ব'সে হাজার টাকা খরচ ক'রে যতই ‘ড্রয়িং-রুম্’ সাজাও, কখনোই জাগবে না সেখানে রূপের এমন ঐশ্বর্য্য, লাবণ্যের এত ছন্দ! সহরে ব'সে আমরা যা করি তা হচ্ছে আসল সৌন্দর্য্যের ‘ক্যারিকেচার’ মাত্র, কাগজের ফুলের মতই অসার! তাই তো আমি যখন-তখন কুৎসিত সহর আর কপট সভ্যতাকে পিছনে ফেলে ছুটে যেতে চাই সৌন্দর্যময় অজানা বিজনতার ভিতরে। রামহরি জানে, আমরা দুরন্ত ডানপিটে, খুঁজি খালি অ্যাডভেঞ্চার। কিন্তু তুমি জানো কুমার, এ কথা সত্য নয়! চোখের সামনে রয়েছে এই যে তাপরূপের নাট্যশালা, আমাদের কল্পনা কি এখানে অভিনয় করতে ভালোবাসে না? আমরা কি কেবল ঘুসোঘুসি করতে আর বন্দুক ছুঁড়তেই জানি, কবিতা পড়তে পারি না?”

 কুমার বললে, “আমার কি মনে হচ্ছে জানো বিমল? ঐ ফুলের বনে, ঐ ঝরণার ধারে একখানি পাতার কুঁড়েঘর গ’ড়ে সত্যিকার কবির জীবন যাপন করি! চারিদিকে বনের গান, পাখীর তান, বাতাসের ঝঙ্কার, মৌমাছির গুঞ্জন, ফুলের সঙ্গে প্রজাপতির রঙের খেলা, দিনে মাঠে মাঠে রোদের কাঁচা সোনা, রাতে গাছে গাছে চাঁদনীর ঝিলিমিলি,