পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wტ8 অরক্ষণীয়া শাস্তু কহিলেন, গেনির বিয়ে ; আর ত আমি রাখতে পারিনেকাজেই, আমাদের নবীনের সঙ্গেই সামনের পাঁচুই ফাগুনে কথাবার্তা পাকা করে ফেলতে হল। এদিকে গয়নাগাটিও মন্দ দেবে না বলচে। দেখতে-শুনতে সবদিকেই ভাল হবে দেখলাম। কিনা ! খবর শুনিয়া দুর্গার মাথায় বাজ ভাঙ্গিয়া পড়িল। কঁদ-কঁাদ হইয়া কহিলেন, আমাকে না বলে কেন কথা দিলে দাদা ? এ বিয়ে তা আমি প্রাণ থাকতে দিতে পারব না ! শাস্তু ক্রুদ্ধ হইয়া কহিলেন, পারব না বললেই হবে ? আমি মামাআমি যা বলব, তাই হবে । তোর জন্যে কথার নড়াচড় করব, তেমন বাপে আমাকে জন্ম দেয়নি—তা জানিস ? এইবার দুর্গা সত্যি-সত্যিই কঁাদিয়া ফেলিলেন, কহিলেন, না দাদা, মেয়ের বিয়ে এখানে আমি মরে গেলেও দেব না-আমার জন্যে তুমি এতটুকু ভেবে না। দাদা-কণ্ঠ রুদ্ধ হইয়া কথাটা তিনি শেষ করিতেই পারিলেন না । শন্তু এই কান্না দেখিয়া মহা বিরক্ত হইয়া, দাঁত খি'চাইয়া কহিলেন, শুভকর্মে মিছে কঁদিস নে ভ্যান ভ্যান করে । যা হবার নয়, যা পারব না।-- রঙ্গস্থলে “পোড়া কাঠ’ দেখা দিলেন। দুই হাত গোবর-মাখ --বোধ করি, তখনো গোয়াল-ঘরের ব্যবস্থাই করিতেছিলেন। উঠানের উপর আসিয়া স্বামীকে উদ্দেশ করিয়া অকস্মাৎ ভাঙ্গা-কঁাসির মত খ্যান খ্যান করিয়া বাজিয়া উঠিলেন- বলি সুপাত্তরটি কে গা ঠাকুর ? একবার শুনতে পাইনে ? শন্তু স্ত্রীর ভাবগতিক দেখিয়া বিচলিত হইলেন। কিন্তু মুখের সাহস বজায় রাখিয়া কহিলেন, যেই হোক, তোর তাতে কি ? “পোড়া কাঠ’ গোবর-মাখা হাত দু-খানা নাড়া দিয়া অর্ধেক উঠানটা যেন নাচিয়া আসিল। তেমনি সুমধুর-কণ্ঠে সমস্ত পাড়াটা সচকিত