পাতা:অশনি সংকেত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত S4 -কাল উনি কোথেকে কত কন্টে পাঁচ কাঠা ধান এনেলেন-কিন্তু শানচি ধান নাকি সব গবরমেন্ট নিয়ে যাচে ? -কে বললে ? -উনি কাল হাট থেকে নাকি শনে এয়েচেন । ছোট-বোঁ বললে-ওসব কথা এখন রাখো দিদি ৷ বামন-বোয়ের জন্যে একটা পান সেজে, নিয়ে এসো দিকি । 爆 -পান আছে, সপরি নেই যে ? কাল হাটে একটা সপরির দাম দােপয়সা। সিদ্ধেবির কামারের বেী বললে-হ্যাঁ দিদি, নাকি আজকাল খোঁজরের বীচি দিয়ে পান। সাজা হচ্চে সপরির বদলে ? অনঙ্গ-বেী বললে--সত্যি ? কামার-বেী বললে--সত্যি মিথ্যে জানি নে ঠাকরণ-দিদি । মিথ্যে কথা বলে শেষকালে বামনের কাছে, নরকে পচে মরবো ? কানে যা শনিচি-বললাম। কথা শেষে সে হাতের এক রকম ভঙ্গি করে মদ হাসলো । এই ঢেকিশালের মজলিশে অনঙ্গ-বৌয়ের পরে দেখতে ভালো হরি কােপালীর ছোট-বোঁ, তার পরেই এই কামার-বেী। এর বয়েস আরও কম ছোট-বোয়ের চেয়ে, রংও আরও একটু ফসাঁ-তবে ছোট-বোয়ের মািখশ্রী। এর চেয়ে ভালো। কামার-বেী সম্পবন্ধে গ্রামে একটু বদনাম আছে, সে অনেক ছেলে-ছোকরার মডু ঘারিয়ে দেবার জন্যে দায়ী, অনেককে প্রশ্রয়ও দেয়। কিন্তু ছোট-বোঁ সম্পবন্ধে সে কথা কেউ বলতে পারে না। অনঙ্গ-বেী বললে-পোড়া কপাল পান খাওয়ার। খেজারের বীচি দিয়ে পান খেতে যাচ্চি নে । ক্ষিত্তরী কাপালী শনে হেসে খােন হয়। আর কি। সে বিনোদ মোড়লের বিধবা বোন, ছাব্বিশ-সাতাশ বছর বয়েস, আধফস থান পরে এসেচে, দেখতে শািনতে নিতান্ত ভালও নয়, খাব মন্দও নয় । কথায় কথায় হেসে গড়িয়ে পড়া ওর একটা রোগের মধ্যে গণ্য । অনঙ্গ-বৌয়ের হাসি পেল ক্ষিত্তরীর হাসি দেখে । হাসতে হাসতে বললে-নে বাপ, থম-তুই আবার জবালালি দেখচি-এত হাসিও VE ! ছোট-বোঁ ঠোঁট উলেট বললে-ওই বোঝো । ইতিমধ্যে বড়-বোঁ কি ভাবে দটাে পান। সেজে নিচু ঘরের দাওয়ার ধাপ থেকে নামলো । ছোট-বেী বললে-বিনি সপরিতে দিদি ? বড়-বো ঝঙ্কার দিয়ে বলল-ওরে না না। খাঁজে পেতে ঘর থেকে উটকে বার করলাম । -८काथान्न छिन् ? --তোকে বলবো কেন ? -কেন ? --তুই সন্দাবস্ব উটকে বের করবি । তোর জবালায় ঘরে কিছদ থাকবার জো আছে ? আমি যাই গিন্নী, তাই সব জিনিস যোগাড় করে তুলে লকিয়ে রেখে দি । আর তুই সব উটকে উটকে বার কারিস। ছোট-বেী চোখ পকিয়ে ভরে তুলে বললে-আমি ? -হ্যাঁ, তুই । আমি কাউকে ভয় করে কথা বলবো নাকি ? তুই ছাড়া আর কে ?