বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



আজকের আমেরিকা
১৫

 সমুদ্র নীরব নিস্তব্ধ। জাহাজ চলেছে প্রবল বেগে। আমরা তারই মাঝে কখনও ঘুমাচ্ছি, কখনও বেড়াচ্ছি, কখনো বা আপন আপন মনের কথা একে অন্যের কাছে বলছি। আমাদের মন সর্বদাই নানা সন্দেহ জালে অচ্ছন্ন ছিল। আগেকার দিনে ধর্মের কথা নিয়ে তর্ক ও আলোচনা হত এবং সেই তর্কবিতর্কের মধ্য দিয়েই মন গড়ে উঠত। এযুগের কথা অন্য রকমের। আগে ছিল মোহম্মদ বুদ্ধ খৃষ্ট এদের কথা। এখন হয় ষ্ট্যালিন হিটলার মুসোলিনী দালাদিয়ের আর চেম্বারলেনের কথা এবং এখনকার মতবাদ হলো ইম্পিরিয়্যালিজম্‌, ফ্যাসিজম্‌, নাজিইজম্ আর কমিউনিজম্‌। আমরা দুজনেই ছিলাম সকলের দৃষ্টি পথে সকল সময়। আমার ভারতীয় সংগীর এসব কোনও মতবাদ নাই তা প্রকাশ করতে গিয়ে একদিন বললেন, তিনি পলিটিক্সের কোন ধার ধারেন না। তাঁর কথা শুনে সকলে হাসল, তারপর আমার দিকে একজন তাকিয়ে বলল, “আপনারও বোধহয় একই মত?” আমি তার প্রতিবাদ করে বললাম, যেদিন এই পৃথিবীতে আমার জন্ম হয়েছে সেদিনই আমি পলিটিক্সের আওতায় এসেছি। পলিটিক্স ছাড়া মানুষ কোন মতেই বাঁচতে পারে না। দুজনের দুদিকে মতিগতি দেখে সকলেই নানা মন্তব্য করতে লাগল। আমি ওদের মন্তব্যে মোটেই কান দেইনি। আমি শুধু ভাবতে লাগলাম, এই পৃথিবীতে শরীরের রংএর জন্য যে তারতম্যের সৃষ্টি হয়েছে, ধর্মের গোঁড়ামীতে যে ছোট বড় বলে একটি নকল আভিজাত্যের সৃষ্টি হয়েছে, তার যাতে ধ্বংস হয়, তাই আমি দেখতে চাই। মানুষ সম্পর্কে মানুষের মনের সংকীর্ণতা না ঘুচলে উন্নত সভ্যতার দাবী চলে না।

 জাহাজ গোল্ডকোষ্ট পার হবার পরই বুয়ার এবং অন্যান্য ইউরোপীয়ানদের মতিগতি পরিবর্তন হতে লাগল। অনেকেই মন