পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ

 ইহার পর তিনি জাপানে “ভারতীয় স্বাধীনতা লীগ” প্রতিষ্ঠা করিয়া উহা পরিচালনা করেন। ভারতবর্ষ সম্বন্ধে তিনি জাপানী ভাষায় পাঁচখানা গ্রন্থ লিখিয়াছেন এবং ডাঃ সাণ্ডারল্যাণ্ড লিখিত “ইণ্ডিয়া ইন বণ্ডেজ” পুস্তক জাপভাষায় অনুবাদ করিয়াছেন। জাপ-ভাষায় তিনি একখানা সংবাদপত্র পরিচালনা করেন। উক্ত সংবাদপত্রে ভারত সম্পর্কে জাপ সংবাদপত্রসমূহেও বহু প্রবন্ধ লিখিয়াছেন এবং জাপানীদের নিকট বহু বক্তৃতাও করিয়াছেন। মহাযুদ্ধ আরম্ভ হইবার পূর্ব্বে টোকিওতে শিবমন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি অর্থসংগ্রহের কাজে লাগিয়া যান।

 ১৯৪২ সালের ১৫ই ফেব্রুযাবী সিঙ্গাপুরের পতন হয়। বৃটিশ সৈন্যগণ পূর্ব্বাহ্ণেই পলায়ন করেন, কিন্তু ভারতীয় সৈন্যদলকে কিছু না জানাইয়া তাঁহাদের অনিশ্চিত ভাগ্যের উপর ফেলিয়া রাখা হয়। ব্রিটিশ সমর-অধিনায়কগণের আদেশে সিঙ্গাপুরের সমস্ত ভারতীয় সৈন্য বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পণ করেন।

 এই সকল ভারতীয় সৈন্য ও প্রবাসী ভারতীয়গণকে যাহাতে জাপানীদের পক্ষে যুদ্ধে লাগাইতে পাবেন সেই হিসাবে মেজর ফুজিয়াবা ইঁহাদের নেতৃবৃন্দকে একটি সংঘ গঠন করিতে বলেন। ইঁহারা ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতাকে মূলমন্ত্ররূপে গ্রহণ করিয়াছিলেন এবং জাপানের তাঁবেদার হিসাবে গণ্য হইতে অস্বীকার করেন। ইহার পর মার্চ্চ মাসের শেষে রাসবিহারীর সভাপতিত্বে টোকিওতে এক সম্মেলন হয়। এই সম্মেলনে কয়েকটি প্রস্তাবের মধ্যে একটিতে বলা হয়—পূর্ব্ব-এশিয়াপ্রবাসী ভারতীয়গণের পক্ষে স্বাধীনতা আন্দোলনের ইহাই প্রকৃষ্ট সময়। এতদ্বারা গঠিত আজাদ হিন্দ ফৌজ কেবল সামরিক প্রয়োজনে জাপানের নিকট হইতে নৌবল ও বিমানবল প্রভৃতি চাহিতে পারিবে। ভারতবর্ষের ভবিষ্যৎ শাসনতন্ত্র রচনা করিবার অধিকার একমাত্র ভারতীয় নেতৃবৃন্দেরই থাকিবে এবং ভারতের জাতীয় কংগ্রেসই সেই অধিকারের মালিক।

 জুন মাসে ব্যাঙ্ককেও একটি প্রতিনিধি সম্মেলনে আজাদ হিন্দ আন্দোলনের