পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
১২১

ক্যাপ্টেন সেহগল বলেন যে, ভারত রক্ষার ব্যবস্থাদি সম্পর্কে তাঁহারা যে সকল সংবাদাদি পাইয়াছিলেন তাহাতে তাঁহারা বুঝিয়াছিলেন যে বৃটিশ সরকারের ভারত রক্ষার ব্যবস্থাদি মোটেও পর্য্যাপ্ত নহে। তাঁহাদের মধ্যে অতি দৃঢ়চিত্ত ব্যক্তিগণও চিন্তা করিয়াছিলেন যে ভারতে জাপদিগকে বাধা দিবার শক্তি বৃটিশ সরকারের নাই। তাহাদের মধ্যে বহুদিন আলোচনার পর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, জাপানীদের পাশাপাশি যুদ্ধ করিয়া এক শক্তিশালী ও শৃঙ্খলাপরায়ণ সশস্ত্র ভারতীয় সেনাবাহিনী ভারতবর্ষ দখল করিবে এবং ভারতে পৌঁছিয়া তাহারা স্বদেশকে বিদেশীদের শাসনাধিকার হইতে মুক্ত করিবে। জাপানীরা ভারতের শাসনকর্ত্তা হইয়া আসিতে চাহিলে এই বাহিনী তখন জাপানকে প্রবলভাবে বাধা দিবে এবং ভারত হইতে জাপদিগকে তাড়াইয়া দেওয়া হইবে।

 বৃটিশের বিরুদ্ধে জাপানকে শাসন কর্ত্তার গদীতে বসাইতে তাহাদের বিন্দু মাত্রও ইচ্ছা ছিল না। জাপানীদের খারাপ ব্যবহারের ভয়ে অথবা ভাড়াটে মনোভাব দ্বারা চালিত হইয়া আমি আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদান করি নাই। ১৯৪২ সালের সেপ্টেম্বর আজাদ-হিন্দ ফৌজের একজন ক্যাপ্টেন হিসাবে আমি মাত্র ৮০ ডলার পাইয়াছিলাম। অথচ বাহিরে থাকিলে আমি মাসে ১২০ ডলার উপার্জ্জন করিতে পারিতাম। আমি একমাত্র স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হইয়াই এই আজাদ-হিন্দ সেনাদলে যোগদান করিয়াছিলাম।

 যদিও আজাদ-হিন্দ-ফৌজ তাহাদের প্রধাণতম উদ্দেশ্য ভারতের স্বাধীনতা অর্জ্জনে সফলকাম হয় নাই তবুও আজাদী বাহিনীর প্রতিই লোকের মনে এই আত্মপ্রসাদ রহিয়াছে যে আজাদ-হিন্দ ফৌজের সেনানীদল মালয়, ব্রহ্ম এবং অন্যান্যস্থানে ভারতবাসীদের ধন প্রাণ ও সম্মান রক্ষা করিয়াছে। আমাদের বিচার আরম্ভ হওয়ার পর রেঙ্গুণস্থ ভারতীয় খৃষ্টান সমিতির এবং ব্রহ্ম প্রবাসী ভারতীয় সমিতির সভাপতিদ্বয়ের নিকট হইতে আমি যে তারবার্ত্তা সমূহ পাইয়াছি ইহা আমার উপরোক্ত মন্তব্যের জাজ্জ্বল্য প্রমাণ।