পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
১৭৯

ধারায় ইহা লেখা আছে যে, আইনগত সমর্থন লইয়া যদি কোন অপরাধ করে, তাহা হইলে সেটা অপরাধ নহে। সুতরাং এই কারণে আন্তর্জ্জাতিক আইন অনুসারে যুদ্ধ স্বীকৃত হইলে উক্ত বিচার কখনও চলিতে পারে না। এখানে আমার দৃষ্টান্তে উল্লিখিত জার্ম্মণটিকে যদি নরহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় তাহা হইলে সে তখন বলিতে পারে যে জার্ম্মাণ রাষ্ট্র তখন বৃটেনের সহিত যুদ্ধে লিপ্ত ছিল এবং জার্ম্মাণ রাষ্ট্রের আদেশানুসারেই সে যথারীতি যুদ্ধ করিয়াছিল। সুতরাং সাধারণ আইনের নিকট নরহত্যা গভীর অপরাধ হইলেও যুদ্ধকালীন নরহত্যা কোন অপরাধ নহে।

 শ্রীযুত দেশাই অতঃপর দৃঢ়স্বরে ঘোষণা করেন—ইহা অতি স্বাভাবিক সত্য যে যুদ্ধকালীন অবস্থার সহিত অসামরিক সাধারণের কখনও প্রয়োগ চলিতে পারে না, অতঃপর সামরিক আদালতের বিচারপতিদিগকে সম্বোধন করিয়া শ্রীযুত দেশাই বলেন—আপনারা যদি যুদ্ধকালে কোন নরহত্যা কারিয়া থাকেন তাহা হইলে যুদ্ধাবসানে অপর পক্ষের সামরিক আইন অনুসারে আপনাদিগকে অভিযুক্ত করা যাইতে পারে কি? আপনারা এক সুসংবদ্ধ রাষ্ট্রের সুসংগঠিত সেনাবাহিনীর প্রতি আনুগত্যে আবদ্ধ থাকিয়াই সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখিয়া যুদ্ধকালে আপনারা আপনাদের কর্ত্তব্য কর্ম্ম করিয়া গিয়াছেন। আপনাদের রাষ্ট্র অপর রাষ্ট্রের সহিত আইন অনুসারে যুদ্ধ ঘোষণা করিয়াছিল। এই উপলক্ষে শ্রীযুত দেশাই আন্তর্জ্জাতিক আইনের গ্রন্থাবলীর বিস্তৃত আলোচনা করেন। হোয়েটনের লিখিত আন্তর্জ্জাতীয় আইন গ্রন্থ হইতে উদ্ধৃত করিয়া শ্রীযুত দেশাই তাঁহার বক্তব্যের দৃঢ় সমর্থন জ্ঞাপন করেন। উক্ত আইনের গ্রন্থে এইরূপ লিখিত আছে:—

 “আন্তর্জ্জাতিক কর্ত্তৃত্বের অনুপস্থিতিতে যদি দুই রাষ্ট্রের পরস্পর যুদ্ধ ঘোষণা হয় তাহা হইলে আন্তর্জ্জাতিক আইন অনুসারে উহা সম্পূর্ণ আইনগত। উক্ত যুদ্ধ সময়ের কোন কার্য্য কলাপের সহিত শান্তিকালীন কোন কার্য্যকলাপের তুলনা করা যাইতে পারে না।