পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৪
আজাদ হিন্দ ফৌজ

সুযোগ ও সুবিধা ভোগ করিতে পারে তবে আজাদ হিন্দ ফৌজের সদস্যরাও বা কেন পারিবে না?

 অতঃপর শ্রীযুত দেশাই পার্লিয়ামেণ্টে সহকারী ভারত, সচিব মিঃ হেণ্ডারসনের একটি বিবৃতির উল্লেখ করেন। মিঃ হেল্ডারসন বলিয়াছেন, “রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ব্যতীত, আজাদ হিন্দ ফৌজের যে সমস্ত সদস্য গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হইয়াছে কেবল মাত্র তাহাদেরই বিচারার্থ উপস্থিত করা হইবে।

 কোন সরকারী বিবৃতির আশ্রয় আমি নিতে চাই না। কিন্তু এই বিবৃতিতে প্রকারান্তরে ইহাই স্বীকার করা হইয়াছে যুদ্ধ ঘোষণার অপরাধ গুরুতর অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে না।”

 যদি আনুগত্যের প্রশ্ন সম্বন্ধে শ্রীযুত দেশাই বলেন সিঙ্গাপুর পতনকালীন সব চেয়ে বড় ঘটনা হইল এই যে ভারতীয়রা বৃটিশবাহিনী ও বৃটিশ অফিসারদের হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িয়াছিল। লেঃ কর্ণেল হাণ্ট ভারতীয়দের মেজর ফুজিয়ারার হাতে অর্পণ করেন। মেজর ফুজিয়ারার ভারতীয়দের বলেন যে যদি ভারতীয়রা দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করিতে চায় তবে তাহারা তাহা করিতে পারে।

 মোহন সিং ঘোষণা করেন যে ভারতের স্বাধীনতার জন্য আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠিত হইবে ওখানকার সমস্ত ভারতবাসী তাহাতে আনন্দ প্রকাশ করে।

 ক্যাপ্টেন আর্শেদ বলেন, একমাত্র আমাদের দেশের প্রতি আনুগত্যের প্রশ্নই আমাদের সম্মুখে ছিল।

 জন আমেরির সাম্প্রতিক বিচারের উল্লেখ করিয়া শ্রীযুত দেশাই বলেন যে, ইংলণ্ডে দেশ ও রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাই বিশ্বাসঘাতকতা বলিয়া গণ্য হয়। ভারতবর্ষের বর্ত্তমান অবস্থায় এ প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক যে আনুগত্যের সীমানা কতখানি, দেশ হইতে যদি রাজাকে পৃথক করিয়া ধরা হয় তবেই সমস্যা কঠিন হইয়া উঠে।