পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ

সরকার পক্ষ লাহোর ষড়যন্ত্রের মামলা আরম্ভ করিলেন। এই সময় ভারতীয় বিপ্লববাদীদের বিপ্লবের ঐকান্তিক চেষ্টার ইতিহাস প্রকাশিত হইয়া পড়িল।

 ইহাদের সহিত আমেরিকাবাসী গদরের ঘনিষ্ঠ যোগ, আমেরিকার জার্মাণ কন্সাল ও গুপ্তচরদের নিকট হইতে সাহায্য গ্রহণের আয়োজন, বাংলার বিপ্লবীদের সহিত যুক্ত হইয়া সেখান হইতে বোমা ও অন্যান্য বিস্ফোরক আমদানী, ডাকাতি ও হত্যা প্রভৃতি ভীষণ কার্য্য জনসাধারণ জানিতে পারিল। বিচারে কয়েকজনের ফাঁসী ও কয়েকজন মুক্তি পাইলেন, অবশিষ্ট কর্ম্মীদের কারাদণ্ড হইল। কয়েক জনের দ্বীপান্তরও হইয়াছিল; তন্মধ্যে ভাই পরমানন্দের নাম উল্লেখযোগ্য। ইহার পর সরকার ভারতরক্ষা আইনের সাহায্যে ১৬৮ জন পাঞ্জাবীকে বিপ্লবী সন্দেহে, ও Ingress Ordinance বিধি অনুসারে ৩৩১ জন লোককে আবদ্ধ কবিয়া রাখিলেন। প্রত্যাগত শিখদের মধ্যে ২,৫৭৬ জনকে নিজ নিজ গ্রামে নজরবন্দী রাখা হইল।

 লাহোর ষড়যন্ত্রে অনেক উচ্চ শিক্ষিত লোক ছিলেন। তাঁহারা সকলেই মৃত্যু বরণ করিলেন অথবা কারাপ্রাচীরের অন্তরালে মৃত্যুর প্রতীক্ষায় দিন গণনা করিতে লাগিলেন। এই ঘটনার পর সশস্ত্র বিপ্লবের শেষ আশা নষ্ট হইল। এই সকল রাজনৈতিক বিপ্লব দমনকল্পে শিখ সর্দ্দারগণ, পাঞ্জাবী জমিদার ও প্রধান ব্যক্তিগণ সরকারকে বিশেষভাবে সাহায্য করিয়াছিলেন। তাঁহাদের সাহায্য ব্যতীত কেবল পুলিসের পক্ষে এরূপ ভাবে কাজ করা সম্ভব হইত কি না সন্দেহ।

 রাসবিহারী লাহোরে বিদ্রোহ জাগরণে অসমর্থ হইয়া ১৯১৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসেই ছদ্মবেশে দেশত্যাগী হইলেন। রাসবিহারীর নামে গ্রেপ্তারের পরোয়ানা ছিল। তথাচ সমস্ত বাধা অতিক্রম করিয়া তিনি পুলিসকে ফাঁকি দিলেন। সেই সময় রবীন্দ্রনাথ জাপান যাইতেছেন। রাসবিহারী P.N. Tagore নাম লইয়া ও রবীন্দ্রনাথের আত্মীয় বলিয়া নিজের পরিচয় দিয়া, তাঁহার পূর্বে জাপানে গিয়া ব্যবস্থাদি করিতে হইবে এই অজুহাতে ছাড়পত্র প্রভৃতি লইয়া