পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থাকিতেন, তখন বহির্বাটিতে ঐ উমেদার গোষ্ঠীগণের পাচিত অন্ন আমরা সমানে স্বচ্ছন্দে গ্রহণ করিতাম। উমেদারগণের মধ্যে আহার বেলোয়া গ্রামবাসী দীননাথ বসু আমার সম্পর্কে ঠাকুরদাদা ছিলেন । তিনি প্রাতঃকালে পিতার সমক্ষে, পৃথক আসনে বসিয়া, আমাকে কাছে লইয়া ক সামাজা শিখাইতেন । পিতার দৃষ্টি আমাদের উপরে থাকিত ; আমাদের মধ্যে সকল কথা তিনি শুনিতে পাইতেন ও শুনিতেন। সেই সময়ে তিনি দশজনের সঙ্গে নানা কথায় এবং নানাকার্য্যে ব্যাপৃত থাকিলেও আমাদের নাতি ঠাকুরদাদাকে কখন নজর ছাড়া, মন ছাড়া করিতেন না । ইহাও একরূপ প্রাইবেট টিউসনে ; কিন্তু দোতালা বৈঠকখানায় বাবু মহাশয়, আর দালানের পাশে নীচের ঘরে সঁ্যাত মেজেয়, সেগুণের টেপিলের দুই পাশ্বে ছাত্র এবং ‘সার’- সেই একরূপ প্রাইবেট টিউসন । পিতা শয়নে-ভোজনে আমাকে সঙ্গী করিতেন, তাহা পূর্বেই বলিয়াছি। “ ঐ সব সময়ে আমি ছিলাম তাহার সঙ্গী, আমার খেলার সময়, তিনি আমার সঙ্গী হইতেন । প্রত্যহ বৈকালে, আমার সমবয়স্ক স্কুলের ছেলেরা আসিয়া জুটিত, আমরা হাতে তৈয়ারি কাঠের ব্যাট ও সেলাই করা ন্যাকড়ার বল লইয়া ব্যাটম্বল খেলিতাম। পিতা কাছারী হইতে বাসায় গিয়া, কাপড় ছাড়িয়া, হাত মুখ ধুইয়া, জল খাইয়া, আমাদের খেলায় যোগদান করিতেন । কখন ব্যাট দিয়া বল মারিতেন, কখন বোলারের কার্য্য করিতেন ; অন্য খাটাখাটুনী কখন খাটিতেন না । তঁহার মত গুরুজনের পক্ষে সেরূপ হওয়াই, স্বাভাবিক বলিয়া আমরা বুঝিয়া লইয়াছিলাম। এক একদিন সান্ধ্য মজলিস-আমাকে লইয়াই হইত। ছেলেবুড়া আমরা সকলে মিলিয়া, পরস্পর পরস্পরকে হিয়ালী জিজ্ঞাসা করিতাম। কিছুকাল পরে দাড়াইয়া গেল যে, আমি একলা অভিমনুযাবৎ এক পক্ষ, আর মহামহা সপ্তরিখী সকলেই আমার বিপক্ষ । কিন্তু অভিমনু্যার মত সকল সময় আমার পরাজয় হইত না ; আমি এক একদিন লবকুশের গৌরব রক্ষা করিতাম । আমার পেটে সংস্কৃত, হিন্দি, বাঙ্গালা প্রহেলিকা গজ গজ করিত। ইংরাজী তখন শিখি নাই বলিলেই হয়, সুতরাং ইংরাজী হিয়ালীর ধার ধারিতাম না । কিন্তু ১ । এক বর্গ সমুদ্ভূতশচতুবৰ্গ ফলপ্রদঃ। অনুল্যোম বিলোমেন সদেব পাতঃ বিঃ সদা | ২ । আয় ব্রাদার আজব দিদিমা চারুরঙ্গী জানোয়ার। শের পতঘ, চসম আহু, ফীল গর্দন, বাঙািখর। ৩ । প্রথম অক্ষর নিলাম না, শেষের অক্ষর সেই, নিরাকার নির্মাত্র ভেদ মাত্র এই ; Vo