পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাসা-ভাসি থাকে না, আঁটা-আঁটি হয়। শুদ্ধসত্ত্ব বুদ্ধি হইতেই আস্থা হইয়া থাকে। এই বুদ্ধি আমাদের দিন দিন কমিয়া যাইতেছে ; কাজেই আস্থাও কমিতেছে। দেখিতে পাওয়া যায়, এখনকার দিনে, ‘অন্ধ" বিশ্বাসে অনেকেরই মহাভয় হয় । কিন্তু কতটুকু অন্ধ-বিশ্বাস, আর কতটুকু চক্ষুন্মান বিশ্বাস- তাহ) আমাদিগকে কে বলিয়া দিবে ? আমাদের দেশের মহা মহা দার্শনিক, এমন কি, এই সকল বিষয়ে “মিল কোমৎ’ হইতে ও অধিকতর দার্শনিক ঋষিগণ, তপস্থিা গণ, ব্যাখ্যাকারগণ নাস্তিকের নানা তর্ক খণ্ডন করিয়া, পরকালের বিশ্বাস দৃঢ়তর করিয়াছেন । সেই সকল দেখিব না, পড়িব না, বুঝিবার চেষ্টা করিব না, আর না পড়িয়া, না শুনিয়া, বলেন যে, পরকালের বিশ্বাস অন্ধবিশ্বাস মাত্র । এ সকল অতি আসার কথা ; কি গৈ, আমরা দিন দিন এই অসারতার কুপে মগ্ন হইতেছি। পুবেই বলিয়াছি, পিতার মাতৃদেবী, শিশু পিতাকে রাখিয়া পতির পাদ বক্ষে ধারণ করিয়া অনুমূত হন । আগুনখাকির বিশ্বাস, আগুনের মত জ্বলন্তই ছিল, সন্দেহ নাই । শাস্ত্র বিধিতে বাধ্য হইয়া, মৃত ঠাকুরদাদাকে লইয়া, ঠাকুরমাকে জাহ্নবী তাঁটে বটতলায় তিনদিন বাস করিতে হয় । সুতরাং লোকে বুঝাইবার, পড়াইবার, অথবা উত্ত্যক্ত করিবার, সময় সুযোগ প্রচুর পাইয়াছিল। সকলে বলিল “তুমি এই কঁচা বয়পে পুড়িয়া মরিতে পরিবে না ।” নিকটে প্রদীপ জ্বালৰে ছিল, ঠাকুরমা জলন্ত শিখায় অঙ্গুলি ধরিয়া বুহিলেন । লোকে স্তব্ধ হইল। কিছুক্ষণ পরে তঁহাকে ক্ষান্ত করিল ; তাহার সহিত বিতর্ক ছাড়িয়া দিল । বলিল “এমন দুধের ছেলেটিকে ফেলিয়া যাইতে তোমাব মমতা হইতেছে না ?” ঠাকুরমার চক্ষু জশিতে লাগিল ; দূরে জলস্ত কটাক্ষক্ষেপ করিলেন, যেন গঙ্গাপারে কিছু দেখিতে পাইতেছেন। বলিলেন,- “তোমরা দেখিতে পাইতেছি না, আমি দেখিতে পাইতেছি, আমার এই ছেলে, রাজা হইবে, মহাযশস্বী হইবে, মহাসুখী হইবে।” বাব! এই সঞ্চি লৈ কথা বলিতেন, আর বিশ্বাসে। তঁাস্থার মুখ প্রফুল্প হইত। তাহাঁর মাতৃম্বসাকে সম্বোধন করিয়া একদিন আমাদের সমক্ষে বলিলেন “তা মাসি, তিনি যাহা বলিয়াছিলেন, তাহাই ত হইয়াছে, আমিও রাজাই হইয়াছি । আর তিনি দেখিলেন না বলিয়াই বা আমি দুঃখ কৱিৰ কেন ? তিনি অবশ্য দিব্যচক্ষে দেখিতে পাইয়াছিলেন ত ” ঠাকুরমার আগুন খাওয়ার মত জ্বলন্ত বিশ্বাস না থাকুক, পিতা বিশ্বাসী হিন্দু ছিলেন । ঈশ্বরে বিশ্বাস করিতেন, পরকালে বিশ্বাস কৱিতেন । পূজা পাকৰণে বিশ্বাসের সহিত কত আনন্দ উপভোগ করিতেন। তাহা গৃহস্বামীর বর্ণনায় নিজেই চিন্ত্রিত করিয়া গিয়াছেন ; সে কথা পূর্ব্বে বলিয়াছি ; সে চিত্র আপনাদের সমক্ষে ধরিয়াছি। মহাবিপায় হইয়া, একমনে কাতর। প্রাণে ঈশ্বরকে ভাকিলে, ভগবান অভয় দান “¢•ፃ