আত্মজীবনী ও স্মৃতি-তৰ্পণ Sbr9) সেখানে আর বাঙালী ছিল না। দীনেন্দ্রবাবুৱ কাষকৰ্ম খুব কমই ছিল এবং অবসরও যথেষ্ট ছিল ; কিন্তু তিনি বাঙালীর সঙ্গে প্রাণ খুলে আলাপ করতে না পেরে হ্যাপিয়ে উঠেছিলেন, এ কথা আমি জানতাম। আমি তখন উপেন্দ্রবাবুর সম্মতি নিয়ে বরোদায় দীনেন্দ্রবাবুকে পত্র লিখলাম। তিনি সানন্দে আমার সহযোগী হ’তে সম্মত হলেন এবং দশ পািনর দিনের মধ্যে, কলিকাতায় এসে আমার পাশে বসে তিনিও হাপি ছাড়লেন-আমিও হাপি ছাড়লাম । আমি তখন বাগবাজার মদনমোহন তলার সম্মুখস্থ শক দ্বীটের মোড়ে একটা মেসে থাকতাম । এই মেসে আমাদের গ্রামেরই কয়েকজন । বাইরের লোকের মধ্যে শ্রীযুক্ত মহেন্দ্রনাথ মিত্র ও র্তার ভাই ঞ্জিতেন্দ্রনাথ থাকতেন। মহেন্দ্রবাবু তখন ইণ্ডিয়া গভর্ণমেণ্টের হিসাব আপিসে চাকরি করেন এবং জিতেন্দ্রনাথ ইষ্টার্ণ বেঙ্গল রেলের ওভারসিয়ার ছিলেন। এই মহেন্দ্রবাবুই পরে আমার বৈবাহিক দীনেন্দ্রবাবুকে আমাদের এই মেসে স্থান করে দিলাম। আমার আর কোন ভাবনা রইল না। এক দিকে দীনেন্দ্রবাবুব মত অবিশ্রান্ত লিখিয়ে, আর এক দিকে ক্ষেত্র দাদা মহাশয়ের মত বিশ্বকোষ। ‘বসুমতী’ সগর্বের গন্তব্য পথে অগ্রসর হতে লাগলো। তার গতি প্রতিহত করবার অনেক হীন চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু ভগবানের কৃপায় সবই বিফল হয় । এইখানে একটা অবাস্তর কথার অবতারণা করতে হচ্ছে । এই বৃদ্ধ দাদার প্রসিদ্ধ চুরুট-খোর বলে যে একটা সুনাম বা বদনাম রটে গিয়েছে, সেই চুরুট ধরিয়েছিলেন কে জানেন ?- বনুমতী’র মালিক স্বৰ্গীয় উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় মহাশয় । ‘বসুমতী’ আফিসে প্রবেশ করবার দুইতিন মাসের মধ্যেই তিনি প্রথম আমার হাতে চুরুট তুলে দেন। এ নেশার তিনিই আমার গুরু। কিন্তু চারপাচ মাস যেতে না যেতেই শিস্য গুরুকে অতিক্রম করে গিয়েছিল । গুরুর যদি ছয়টা চুরুটে দিন-রাত চলতে-শিষ্যের বারটা লাগতো। সুখের কথা এই যে যতদিন বসুমতী’তে কাষ করেছি, এই চুরুট। কিনবার জন্য একটি পয়সাও আমাকে ব্যয় করতে হয় নি, উপেক্সবাৰু সমভাবে এই দীর্ঘকাল চুরুট জুগিয়ে এসেছেন। তাই এখনও ঘেদিন 'বসুমতী' অফিসে গিয়ে শ্রীমান সতীশচন্ত্রের কক্ষে প্রবেশ করি, তখন তিনি মামুলী অভ্যর্থনা ‘আসুন বন্ধন” না বলে আমাকে দোখৰামাত্রই-‘ওরে কে আছিস নীগগির চুরুট নিয়ে আয়’ বলে আমাকে
