পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

তাহা জানিবার উপায় নাই—কিন্তু এখন তাহাদের একমাত্র ধারণা যে, ব্রহ্মপুরাণের কুস্তির প্যাচ বায়ুপুরাণ দিয়া খসাইতে হইবে। আর পরাশরের লাঠির মার হারীতের লাঠিতে ঠেকাইতে হইবে। আর কোন পথ নাই। সুতরাং, যে ব্যক্তি এই কাজটা যত ভাল পারেন, তিনি তত বড় পণ্ডিত। ইহার মধ্যে শিক্ষিত ভদ্রব্যক্তির স্বাভাবিক সহজ বুদ্ধির কোন স্থানই নাই। করণ, সে শ্লোক ও ভাষ্য মুখস্থ করে নাই। | অতএব, হে শিক্ষিত ভদ্রব্যক্তি! তুমি শুধু তােমাদের সমাজের নিরপেক্ষ দর্শকের মত মিটমিট করিয়া চাহিয়া থাক, এবং শাস্ত্রীয় বিচারের আসরে স্মৃতিব আর তর্করত্ন কণ্ঠস্থ শ্লোকের গা ভাজিয়া যখন আসর গরম করিয়া তুলিবেন, তখন হাততালি দাও। কিন্তু তামাশা এই যে, জিজ্ঞাসা করিলে এইসব পণ্ডিতেরা বলিতেও পারিবেন না—কেন তারা ও-রকম উন্মত্তের মত ওই যন্ত্রটা ঘুরাইয়া ফিরিতেছেন। এবং কি তঁাদের উদ্দেশ্য ! কেনই বা এই আচারটা ভাল বলিতেছেন এবং কেনই বা এটার বিরুদ্ধে এমন বাঁকিয়া বসিতেছেন। যদি প্রশ্ন করা যায়, তখনকার দিনে যে উদ্দেশ্য বা যে দুঃখের নিষ্কৃতি দেবার জন্য অমুক বিধি-নিষেধ প্রবর্তিত হইয়াছিল—এখনও কি তাই আছে ; ইহাতেই কি মঙ্গল হইবে ? প্রত্যুত্তরে স্মৃতিরত্ন তাহার গা বাহির করিয়া তােমার সম্মুখে ঘুরাইতে থাকিবেন, যতক্ষণ না তুমি ভীত ও হতাশ হইয়া চলিয়া যাও। | এইখানে আমি একটি প্রবন্ধের বিস্তৃত সমালােচনা করিতে ইচ্ছা করি। কারণ, তাহাতে আপনা হইতেই অনেক কথা পরিস্ফুট হইবার সম্ভাবনা। প্রবন্ধটি অধ্যাপক শ্রীভৰবিভূতি ভট্টাচার্য বিদ্যাভূষণ এম. এ. লিখিত ‘ঋগ্বেদে চাতুৰ্বণ্য ও আচার’ ভারতবর্ষে প্রথমেই ছাপা হইয়া বােধ করি, ইহা অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছিল। কিন্তু আমি আকৃষ্ট হইয়াছি, ইহার শাস্ত্রীয় বিচারের সনাতন