পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৬
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

 সোমনাথের ভাগিনীপতি পাঁচুবাবু বললেন, তোমার মুণ্ডু। পাপ কিচ্ছু কর নি, মানবধর্ম পালন করেছ, বউকে শ্রেষ্ঠ উপহার দিয়েছ। না হলে চিরকাল গঞ্জনা খেতে। তবে হা ঁযদি তাকে তিন বারের বেশি আঁতুড় ঘরে পাঠাও তবে তোমাকে বর্বর স্বার্থপর সমাজদ্রোহী বলব। কুইন ভিক্টোরিয়ার যুগ আর নেই, গণ্ডা গণ্ডা সন্তানের জন্ম দিলে দেশের লোক কৃতার্থ হবে না।

 পণ্ডিত হরিবষ্ণু সত্যার্থি বললেন, ওহে সোমনাথ, বউমাকে জম্ভলার নাম নিতে বল। আস্ত গোদাবরীতনরে জম্ভলা নাম রাক্ষসী, তস্যাঃ স্মরণমাত্রেণ গাভী বিশল্যা ভবেৎ। অর্থাৎ গোদাবরীর তরে জম্ভলা রাক্ষসী থাকে, তার নাম স্মরণ করলেই গর্ভণীর যন্তণা দূর হয়ে সুপ্রসব হয়।

 তারক জ্যোতিষী বলল, এখন নয়, আটটা বেজে তিন মিনিটের সময় জম্ভলার নাম নিতে বলবেন। কাল সকালেই আমি কোষ্ঠী গণনায় লেগে যাব, প্রাচ্য আর পাশ্চাত্ত্য সিদ্ধান্ত, ভৃগু আর জ্যাডকিল,দুটোরই সমন্বয় করব, প্রাচীন নবগ্রহ আর আধুনিক ইউরেনস নেপচুন প্লুটো কিছুই বাদ দেব না। দেখে নেবেন আমার ভবিষ্যৎ গণনা কীরকম নির্ভুল হবে।

 পাঁচুবাব বললেন, ভবিষ্যৎ তো পরের কথা, সন্তানের বর্তমান হালচাল কিছু বলতে পার?

 —না, বর্তমান আমার গণ্ডির বাইরে, আমার কারবার শুধু ভবিষ্যৎ নিয়ে।

 হরিবিষ্ণু সত্যার্থা বললেন, গীতায় আছে, জীবের শুধু মধ্য অবস্থা অর্থাৎ জীবিতাবস্থাই আমরা জানতে পারি, তার পূর্বে কি ছিল এবং মরণের পরে কি হবে তা অব্যক্ত। সোমনাথের সন্তান এখন অতীত আর বর্তমানের সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এ সম্বন্ধে আমাদের শাস্ত্রে