পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

পৌঁছেছি। তুমিই চক্রধর? শ্রীমান ভবানীচরণের বংশধর? আহা, কত বড়টি হয়েছ! ঘরে চল বাবাজী, সব কথা বলছি।

 কাশীনাথের আত্মকথা শুনে চক্রধর স্থির করলেন, লোকটা নেশাখোর নয়, মিথ্যাবাদী জুয়াচোরও নয়, কিন্তু এর মাথা খারাপ। প্রশ্ন করলেন, তোমার ওই ব্যাগে কি আছে?

 —তা তো জানি না, তুমিই খুলে দেখ। এই যে, আমার পইতেতে চাবি বাঁধা রয়েছে, খুলে নাও।

 চক্রধর ব্যাগ খুললেন। গোটাকতক ধুতি গেঞ্জি পঞ্জাবি, একটা এণ্ডির চাদর, একজোড়া চটি, একটা গামছা, আরশি চিরুনি ইত্যাদি। নীচে একটা পোর্টফোলিও। সেটা খুলে চক্রধর আশ্চর্য হয়ে দেখলেন, প্রায় পাঁচ লাখ টাকার গভর্নমেণ্ট কাগজ এবং ভাল ভাল শেয়ার, নগদ দু হাজার টাকার নোট আর দশ টাকার আধুলি সিকি আনি ইত্যাদি।

 —সব তোমারই নামে দেখছি। কি করে পেলে?

 —কিছুই জানি না বাবাজী, সবই জগদম্বার লীলা আর যমরাজের ব্যবস্থা।

 চক্রধর অনেক ক্ষণ ভাবলেন। লোকটি পাগল হলেও গুছিয়ে কথা বলে। একে হাতছাড়া করা চলবে না, বাড়িতেই রাখতে হবে, চিকিৎসাও করাতে হবে। বয়স তো বেশী নয়, বড় জোর ত্রিশ। তাঁর একমাত্র মেয়ের বিবাহ হয়ে গেছে, কিন্তু তাঁর ভাইঝি চন্দনা তো রয়েছে। এই কাশীনাথের সঙ্গে বিয়ে দিলে সেই বাপ-মা-মরা মেয়েটার একটা চমৎকার গতি হয়ে যায়। পাঁচ লাখ টাকার ইনভেস্টমেণ্ট কি সোজা কথা! লোকটা যদি তিন বৎসর আগে আসত তবে চক্রধর নিজের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিতেন।

 চক্রধর বললেন, শোন হে কাশীনাথ। তুমি আমার পূর্বপুরুষ