পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪
আনন্দী বাঈ

ঔষধ সেবনকালে একদিন আনন্দী বাঈ তৃষ্ণায় অতিশয় কাতরা হইয়া ছট্‌ ফট্‌ করিতে লাগিলেন। কিন্তু বিপরীত ফললাভের ভয়ে কেহই তাঁহাকে জল দিতে সাহসী হইল না। তিনি চারি প্রহর কাল তৃষ্ণার যন্ত্রণায় ব্যাকুলা হইয়া নিতান্ত অস্থিরতা-প্রকাশ করিতে লাগিলেন। গোপাল রাও স্ত্রীর অবস্থা দেখিয়া ইতঃপূর্ব্বেই হতাশ হইয়াছিলেন। বাঁচিবেন বলিয়া আনন্দী বাঈ তাঁহাকে বারংবার আশ্বাস দান করিতেন। কিন্তু তাঁহার সে দিনকার অবস্থা দেখিয়া গোপাল রাওয়ের মনে হইল, বুঝি জলাভাবেই শেষে তাঁহার সহধর্ম্মিণীর প্রাণান্ত ঘটিবে। এই ভাবিয়া ও আনন্দী বাঈর যন্ত্রণায় উপেক্ষা প্রকাশ করিতে না পারিয়া তিনি তাঁহাকে কিঞ্চিৎ জলদান করিলেন। জল পান করিয়া রোগিণীর সুস্থতার লক্ষণ প্রকাশ পাইল। ক্রমশঃ সর্ব্বপ্রকার ব্যাকুলতার সহিত তাঁহার শরীরের উত্তাপও হ্রাস পাইতে লাগিল।

 পরদিন (১৮৮৭ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্য্যন্ত এইরূপ অবস্থায় কাটিয়া গেল। সন্ধ্যাকালে গোপাল রাও সহধর্ম্মিণীকে স্বহস্তে কিঞ্চিৎ দুগ্ধ পান করাইলেন। এতক্ষণ পর্য্যন্ত আনন্দী বাঈ বমি করিয়া সর্ব্বপ্রকার খাদ্যই উদ্‌গিরণ করিয়া ফেলিতেছিলেন। কিন্তু স্বামীর হস্তে দুগ্ধ পান করিয়া তিনি তাহা উদ্‌গিরণ করিলেন না। তাহার পর ঔষধ-সেবন করিয়া আনন্দী বাঈ অপেক্ষাকৃত সুস্থভাবে শয়ন করিলেন। গোপাল রাও তিন দিনের মধ্যে এক মুহূর্ত্তের জন্যও তাঁহার নিকট