পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
৪৩

যাবার ইচ্ছা ছিল কিন্তু লোকমুখে শুনলাম, এই পথে জলের বড়ই অভাব, যদিও কাবুল নদী ঐ পথেই বয়ে এসেছে। পাঠানদের কথা বিশ্বাস করতে হয়; কারণ, তারা না জেনে কোন কথা বলে না। দ্বিতীয় পথ নিম্‌লা এবং দুই নম্বর কাবুল হয়ে প্রথম নম্বর কাবুলে পৌঁছেচে। প্রথম নম্বর কাবুল হল আফগানিস্থানের রাজধানী বা পায়তক্ত। দুই নম্বর কাবুল হল কাবুলের কাছেই একটি ছোট গ্রাম। এই গ্রামটির নামমাহাত্ম্য প্রথম নম্বরের কাবুল হতেও বেশি। পূর্বকালে অনেকে আসল কাবুল না যেয়ে নকল কাবুলে তাঁবু খাটাত এবং আসল কাবুল হতে যখন সৈন্য অতর্কিতে আগন্তুক আক্রমণকারীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ত তখন আত্মরক্ষা করতে পারত না। কোনও বৃটিশ জেনারেল নাকি নামের ভুলে দুই নম্বর কাবুলেই নির্বংশ হয়েছিলেন। আকবর হতে আওরংজেব পর্যন্ত মোগল বাদশাদের অনেক সেনানায়ক শুধু নামের গোলমালেই নাকি যুদ্ধ করতে না পেরে আফগানিস্থান হতে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। হতে পারে এসব উপকথা, কিন্তু এই উপকথার মাঝে কিছুটা সত্য আছে বলেই আমার বিশ্বাস। নকল কাবুল অথবা দুই নম্বর কাবুলের কথা যথাস্থানে বলা হবে।

 মানচিত্রে জালালাবাদ এবং কাবুলের সঠিক দূরত্ব ঠিক করা বড়ই কঠিন। তাই অনির্দিষ্ট দূরত্বের জন্য তৈরি হয়েই পথে বের হতে হল। এদিকের পথ পর্বতসংকুল। মোটরকারের পক্ষে বেশ উপযোগী বলতেই হবে, কিন্তু বাইসাইকেলের পক্ষে উপযোগী মোটেই নয়। পথের উপর ছোট-বড় পাথর ছড়ানো রয়েছে। যখনই সাইকেলের চাকা এরূপ পাথরের উপর গিয়ে পড়ে তখনই সাইকেল ছিটিকিয়ে যায় এবং শরীরে বেশ ঝাঁকুনি লাগে।

 এদিকের পথে অনেকগুলি গ্রাম আছে। কোন গ্রামে মানুষের বসবাস আছে আর কোন গ্রামে লোকজন মোটেই নেই। দারিদ্র্যই বোধ হয় এর একমাত্র কারণ। আফগানিস্থান স্বাধীন বটে, কিন্তু এখনও দৈন্যদশা এদের ঘোচে নি; কেননা, যান্ত্রিক যুগে এরা এখনো পৌঁছতে পারেনি। যান্ত্রিক যুগে পৌঁছতে হলে