পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বা নরকের আগুন এসে আত্মাকে জ্বালাতে থাকে। পুণ্যবানদের ক্ষেত্রে সুড়ঙ্গপথে আসতে থাকে বেহেস্তের বাতাস।

 এরপর কিছু প্রশ্ন স্বভাবতই মাথায় নড়া-চড়া করে—ফেরেস্তা দু'জন মৃতদের প্রশ্ন করেন কোন ভাষায়? ফেরেস্তাদের নিজস্ব ভাষায়, না মৃত মানুষটির মাতৃভাষায়? ফেরেস্তি ভাষায় কথা বললে মৃতরা বোঝে কী করে, উত্তরই বা দেয় কী করে? মৃতের মাতৃভাষায় প্রশ্ন করতে গেলে ফেরেস্তাদের মৃতের ভাষা জনতে হবে। পৃথিবীতে প্রায় ৩৫০০ ভাষা প্রচলিত। ফেরেস্তারা এত ভাষা জানেন? গোর আজাব ভোগের সময়সীমা মৃতকে কবরস্থ করা থেকে কেয়ামত পর্যন্ত। কিন্তু কেউ যদি বাঘের পেটে যায়, কিম্বা যায় জলে ডুবে, অথবা কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা অন্য কোনও ধর্মীয় রীতি বা কারণের জন্য মৃতদেহকে কবর দেওয়া না গেলে, গোর আজাব হবে কী করে? কেয়ামতের পর আল্লাহ তাদের বিচার করবেন কী করে?

 ধরা যাক, একজন পাপীকে কবর দেবার পর সে পাঁচ লক্ষ বছর পর্যন্ত গোর আজাবের বর্বরোচিত শাস্তি ভোগের পর কেয়ামত হল, আর এক পাপী ব্যক্তির কবর দেবার এক মিনিটের মধ্যে কেয়ামত হল। লোকটি পাপী হওয়া সত্বেও গোর আজাব ভোগ করার সময়ই পেল না। ফেরেস্তা দু'জনের প্রশ্নোত্তর পালা শেষ হওয়ার আগেই এসে গেল কেয়ামত। এই ক্ষেত্রে দু'জনেই পাপী। হওয়া সত্ত্বেও সমান বিচার পেল কি? না, আদৌ না। একজন পেল পাঁচ লক্ষ বছরের জন্য গোর আজবে পাপের শাস্তি, আর একজন পাপ করেও গোর আজাবের শাস্তি পেল না। আল্লাহের এ কেমন সমান বিচার পদ্ধতি? এর পরও আল্লাহের বিচার ক্ষমতাকে 'শ্রেষ্ঠ' বলে চিহ্নিত করি কী করে? এত ভুল, এত পক্ষপাতিত্ব, এত আজগুবি সমবিচারের প্রহসনের পরও আল্লাহকে নির্ভুল, পক্ষপাতশূনা এক শ্রেষ্ঠ বিচারক বলা যায় কি?

৪৪