মন্দিরের উপরে উঠিবার পূর্ব্ব্বে প্রত্যেকেই, অবনত হইয়া সোপানের নিম্নতম ধাপটি চুম্বন করিতেছে এবং উপরে উঠিয়া পবিত্র নন্দিরচ্ছায়া হইতে বাহির হইবার পূর্ব্ব্বেও, দ্বারদেশে ফিরিয়া আসিয়া দ্বারদেশের মাটি চুম্বন করিতেছে-প্রণাম করিতেছে। দুর্ভিক্ষের প্রেতমূর্ত্তিরাও ক্রমশ আসিয়া জমা হইতেছে এবং উৎসবসাজে-সজ্জিত জনতার গতিরোধ করিতেছে—উহাদের শুষ্ক হস্তের দ্বারা যাত্রীদিগকে আটুকাইতেছে; মলমলের অবগুণ্ঠনবস্ত্রের মধ্যে অঙ্গুলী প্রবিষ্ট করিয়া দিতেছে; ভিক্ষালাভের উদ্দেশে, বানবের ন্যায় ক্ষিপ্রভাবে বিবিধ চেষ্টা, ও অসংযতভাবে,অনায়ভাবে নানাপ্রকার অঙ্গচালনা করিতেছে।
তাঁহার পর, প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় যেরূপ হইয়া থাকে—হঠাৎ একটা বাতাস উঠিল; কিন্তু তাহাতে তপ্তনগর শীতল হইল না। ধূলার কুজ্ঞাটিকার মধ্যে—পীতাভ, বিষঃ ও ম্লান সূর্য অস্তমিত হইল।
এ সমস্ত সত্ত্বেও, রাস্তায় উৎসবঘটা সমস্তরাত্রি সমান চলিতে লাগিল। সুগন্ধি রঙিনচূর্ণ মুঠামুটা উঠাইয়া লোকেরা পরস্পরের উপর নিক্ষেপ কবিতে লাগিল;—উহা লোকের মুখে ও পরিচ্ছদে লাগিয়া রহিল। এইরূপ ঝটাপটি করিয়া যখন উহারা বাহির হইল, তখন দেখা গেল, উহাদের মুখের অর্ধভাগ নীল কিংবা বেগুনী কিংবা লাল রঙে রঞ্জিত;উহাদের শুভ্র পরিচ্ছদে উজ্জ্বল-রং-মাখানো আহস্ত অঙ্কিত হইয়াছে;গোলাপী কিংবা হলদে কিংবা সবুজ-রং-মাখানো পাচ-আঙুলের দাগ পড়িয়াছে।
উদয়পুরের সুরম্য বনভূমি।
যাত্রাপথের ধারে, একটি রমণীয় বনে, গিরিপাদমূলে দর্পণবৎ প্রশান্ত সরোবরের সম্মুখস্থ একটি কুটীরে, তিনজন সন্ন্যাসীর বাস। ইহারা যুবা