বুঝগ্গর।’ সে এমনি হাতির পায়ের দাগ দেখে বলেছিল—
লাল বুঝগ্গর সব সম্ঝো আউর না সমঝে কোই,
চার পয়ের মে চক্কর্ বাঁধকে হবণা কূদে হোই।’
অর্থাৎ লাল বুঝগ্গর সব বুঝতে পারে, আর কেউ বুঝতে পারে না; চার পায়ে জাঁতা বেঁধে হরিণ ছুটে গিয়েছে।
তুরস্ক দেশেও এমনি একটি বেজায় বুদ্ধিমান লোক ছিল, একবার একটা উট দেখে একজন তাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘মশায়, এটা কি জন্তু?’ বুদ্ধিমান বললে, ‘তাও— জান না? খরগোশ হাজার বছরের বুড়ো হয়েছে, তাইতে তার এমনি চেহারা হয়ে গিয়েছে।’ কথাটা কিন্তু নিতান্ত মন্দ বলে নি, খরগোশ যদি হাজার বছর বেঁচে থাকতে পারত, আর সেই হিসাবে তার নাক তুবড়ে গাল বসে মুখ লম্বা হয়ে আসত, তবে তা অনেকটা উটের মত চেহারা হত বইকি।
পাঞ্জাবের এক বুদ্ধিমান বুড়োর কথা আছে, সে বেশ মজার। গ্রামেব মধ্যে, সেই লোকটি সকলের চেয়ে বুড়ো আর বুদ্ধিমান, আর সব বড্ড বোকা। একদিন রাত্রে সেই গ্রামের ভিতর দিয়ে একটা উট গিয়েছিল; সকালে উঠে তার পায়েব দাগ দেখে কেউ বুঝতে পারছেনা যে, কিসের দাগ। শেষে তারা সেই বুড়োর কাছে গিয়ে বলল, ‘দেখ ত এসে বুড়ো দাদা, এ-সব কিসের দাগ?’
বুড়ো দাদা সঙ্গে সঙ্গে সেই উটেব পায়ের দাগগুলো দেখে খানিক হাউ হাউ করে কাঁদল, তারপর হিহি হিহি করে হেসে ফেলল। তাতে সকলে ভাবি আশ্চর্য হয়ে বললে, ‘তুমি কাঁদলে কেন দাদা?’ বুড়ো বললে, ‘কাঁদব না হায় হায়। আমি মরে গেল তোরা কার ঠেঞে এ-সব কথা জিজ্ঞেস করবি?’ তাতে সকলে ভারি দুঃখিত হয়ে বললে, ‘আহা ঠিক বলেছ দাদা। তুমি না থাকলে আর কাকে জিজ্ঞাসা করব? তুমি আবাব হাসলে কেন?’ বুড়ো বলল ‘হাসব না? হাঃ হাঃ হা-হা-আ-আ, আরে আমিও যে বুঝতে পারলুম না, এ ছাই কিসেব দাগ। হাঃ হাঃ হা-হা-আ-আ-আ-আ।’
আর দু ভাইয়ের কথা বলে শেষ করি। এক গ্রামে অনেক চাষা ভূষো থাকে, তাদের সকলের কিছু কিছু টাকা কড়ি আছে, কিন্তু তাদের কেউ কখনো লেখাপড়া শেখেনি, সেজন্য তারা বড়ই দুঃখিত। একদিন তারা সবাই মিলে যুক্তি করল, ‘চল আমরা দুটি ছেলেকে শহরে পাঠিয়ে লেখাপড়া শিখিয়ে আনি। আমাদের গ্রামে একটাও পণ্ডিত নেই, কেমন কথা?’ এই বলে তারা তাদের গ্রামের মোড়লের দুটি ছেলেকে শহরে পাঠিয়ে দিল; তাদের বলে দিল ‘তোরা বিদ্যে শিখে পণ্ডিত হয়ে আসবি।’
তারা দু ভাই শহরে চলেছে, পথের পাশে যা কিছু দেখেছে, কোনটারই খবর নিতে ছাড়ছেনা। এক জায়গায় গাছতলায় একটা হাতি বাঁধা ছিল। তাকে দেখে তারা ভারি আশ্চর্য হয়ে পথের লোককে জিজ্ঞাসা করল ‘এটা কি ভাই?’ তারা বলল, ‘এটা হাতি।’ তা শুনে দু ভাই ভারি খুশি হয়ে বলল, ‘বাঃ, এরি মধ্যে ত এক বিদ্যা শিখে ফেললুম—হাতি, হাতি, হাতি হাতি।’
তারপর শহরের কাছে এসে মন্দির দেখতে পেয়ে তারা একজনকে জিজ্ঞাসা করল, ‘এটা কি ভাই।’ সে বলল, ‘এটা মন্দির।’ তাতে দু ভাই বলল, ‘মন্দির, মন্দির, মন্দির, মন্দির, বাঃ,