পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৯১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিবিধ প্রবন্ধ
৯১৯

বিন্দু দিতে হয়; যথা সা। তারার সুরের মাথায় বিন্দু দিতে হয়; যথা সা। মুদারার সুর সাদা; যেমন সা।


মাত্রা

 গানে যে সকল সুর লাগে, তাহদের জন্য যন্ত্রে এক একটি “পর্দা” আছে। কোন্ পর্দায় কোন্ সুরটি বাজে, তাহা একবার জানিয়া লইলেই কাজ চলিয়া যাইবে। এক্ষণে সুরের স্থায়িত্ব নির্দেশ করিবার উপায় দেখা চাই।

 ব্যাপার বিশেষের স্থায়িত্ব সচরাচর ঘণ্টা, মিনিট, সেকেণ্ড ইত্যাদি শব্দের সাহায্যে ব্যক্ত হয়। ঘণ্টা, মিনিট ইত্যাদি বলিলে কতটুকু সময়কে বুঝায়, আমরা পূর্বেই তাহা জানিয়া রাখিয়াছি। সুতরাং প্রয়োজন হইলে এই সকল শব্দ ব্যবহার করিয়া যে কোন ঘটনার স্থায়িত্ব লিপিবদ্ধ করিতে পারি। সংগীতেও সুর সকলের স্থায়িত্ব এইরূপ উপায়েই ব্যক্ত হয়। তবে, সেখানে ঘড়ি ধরিয়া কাজ হয় না, সুতরাং মিনিট সকেণ্ড ইত্যাদি শব্দেরও আবশ্যক হয় না। সুবিধা মতন একটি সময়কে আদর্শ ধরিয়া তাহারই সাহায্যে সুরের স্থায়িত্ব নির্ধারিত হয়। এই আদর্শ সময়টির নাম ‘মাত্রা’।

 এই আদর্শের পরিমাণ আগাগোড়া স্থির রাখার ক্ষমতা অনেকেরই আছে। যাঁহার নাই তিনিও সহজেই তাহা উপার্জন করিতে পারেন। যাঁহারা হরমোনিয়ম বিক্রয় করেন, তাঁহাদের নিকট “মেট্রনোম” নামক একপ্রকার যন্ত্র অল্প মূল্যে কিনিতে পাওয়া যায়। এই যন্ত্রে ঘড়ির দোলকের ন্যায় একটি দোলক আছে। যন্ত্রে দম দিয়া একবার এই দোলকটিকে নাড়িয়া দিলে তাহা ঠিক সমান ওজনে দুলিতে থাকে এবং সঙ্গে সঙ্গে ঠক্ ঠক্‌ করিয়া একটা শব্দ হয়। যন্ত্রের গতি যথেচ্ছ ‘ঠা’ ‘দুন’ করা যায়। আবার ইহাতে এমন বন্দোবস্ত আছে যে, ইচ্ছা হইলে প্রত্যেক দুই, তিন, চারি অথবা ছয়টি ‘ঠকের’ পর একটি ঘণ্টা বাজিবে। সুতরাং শব্দগুলিকে অতি সহজে গণিতে পারা যায়। এই যন্ত্রের সঙ্গে সঙ্গে কিছুদিন তালি দিতে অভ্যাস করিলে অতি সহজেই সঙ্গীতের আদ্যোপোন্ত সময়ের আদর্শ স্থির রাখিবার ক্ষমতা জন্মিবে। আদর্শের পরিমাণ আগাগোড়া এইরূপ স্থির রাখাকেই ‘লয়’ বলে।

 মেট্রনোমের অভাবে ঘড়ির টক টক শব্দের সাহায্য লওয়া যায়। মেট্রনোম সকলের সংগ্রহ করা সম্ভব না হইতে পারে।


ডাক্তার ফ্রান্‌জ্‌ হারমান মূলার

 যাঁহার কথা আজ তোমাদিগকে বলিতে যাইতেছি, তিনি ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক ছিলেন। বয়স ত্রিশের অধিক হয় নাই, কিন্তু এই অল্প বয়সেই তিনি একজন অতিশয় বিদ্বান এবং বিচক্ষণ লোক বলিয়া প্রশংসা লাভ করিয়াছিলেন। চিকিৎসায় তাঁহার খুবই সুখ্যাতি ছিল, কিন্তু তিনি যে গরীব দুঃখীদের প্রতি অত্যন্ত সদয় ব্যবহার করিতেন, সেজন্য সকলে তাঁহাকে আরও ভালবাসিত। শিক্ষকতারও তাঁহার যশ কম ছিল না।