পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা তাহার অপবাদ ও অজ্ঞাতবাস এবং প্রবাসে যাহা যাহা ঘটিয়াছিল, তৎসম্বন্ধে সে যাহা জানিত এবং তাহাতে সে নিজেও যাহা যাতা করিয়াছে—সব বলিতে আরম্ভ করিলা । সমস্ত শুনিয়া বিরাজ কিয়াৎকাল স্তম্ভিত হইয়া বসিয়া রহিল। তাহার অন্তরে তখন এমন একটা আলোড়ন চলিতেছিল যাহা সাগর মন্থনেরই অনুরূপ। সে আলোড়নের ফলে অতীতের সমস্ত বিস্মৃতি স্মৃতি ভাসিয়া উঠিয়া আবর্তে আবৰ্ত্তে তাঙ্গার মনের উপরে ঘুরিতে লাগিল। সেই জ্যোৎস্না রজনীতে কমলার উদ্দেশে গমন হইতে আরম্ভ করিয়া, -- তাঙ্গার অদশন, অন্বেষণ, অনঙ্গের রোদন, চূড়ামণির কপটাচরণ, , গভীর নিশীথে নিৰ্জন প্রান্তর-পথে সেই প্রত্যাবৰ্ত্তন, পরদিনে যামিনী ও হীরালাল প্ৰভৃতির কথোপকথন এবং সর্বশেষে কাশীতলবাহিনী গঙ্গার, পাষাণ-সোপানে কমলার মূচ্ছি1-পতন পৰ্যন্ত-সমস্ত ঘটনা একে একে পরে পরে যেন চঞ্চলচিত্র’-নিবদ্ধ দৃশ্যাবলীর মত তাহার চক্ষের সম্মুখে ' ভাসিয়া চলিতেছিল। তখন বিরাজ বুঝিতে পারিল, কেন কমলা তাহাকে না বলিয়া চলিয়া গিয়াছিল এবং গিয়াও কেন তাহাকে পত্র দেয় নাই। মূচ্ছিতের মত নিশ্চলাঙ্গে বসিয়া ৰহুক্ষণ চিন্তার পর সশব্দে একটা সুদীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিল, “তার বাপ ত তোমার কিছুই কেড়ে নেন নি, হীরুদা ! ; তবে তার এ সৰ্ব্বনাশে তুমি কেন যোগ দিয়েছিলে ?” হীরালাল নীরব-আধোবদন । তাহার ইচ্ছা হইতেছিল, সে সেই প্রদােষের অন্ধকারে মিশিয়া যায় ; মনে মনে হয় তা বলিতেও ছিল— · “ভগবতি বসুন্ধারে-দেহি মে বিবরম!” [२१>