পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা হ’লেও ফলে সমানই, সুধা ! বিয়ে কর-বুঝতে পারবি, সংসার কত সুন্দর। প্ৰণয়ের মত এমন মধুর ও পবিত্র ভাব হৃদয়ের আর কিছুই নেই ; প্ৰণয়ের স্পর্শে সংসারের অনেক নীরস, কঠোর কৰ্ত্তব্যও মধুর ও মনোহর হ’য়ে ওঠে-অনেক দুৰ্ব্বহ দুঃখ সুবহ হ’য়ে যায়। অবিবাহিত জীবন সত্যই অপূর্ণ, সুধা ! বিবাহিত জীবনের উপরে আবার যদি সৌভাগ্যক্রমে ঈশ্বর-প্রেমের প্রবাঙ্গ এসে পড়ে, তখন তার ভাব যে কত মতান— কত সুন্দর হ’য়ে ওঠে তা বলা যায় না । শ্রাবণের ভরা নদীতে বান এলে যেমন আর নদীর কুল-কিনারা দেখা যায় না-বিপুল জলস্রোত নদীগর্ভের আমেয় হ’য়ে উঠে, সীমা-বাধ ছাপিয়ে বাইরে গিয়ে পড়ে, ঈশ্বরপ্রেমের আবির্ভাব ও মানুষের দাম্পত্য-প্ৰণয়পূৰ্ণ জীবনে তেমনি একটা পূর্ণতা এনে দেয় । তখন উভয়ের প্ৰেম নিজ নিজ আধারকে অভিভূত ক’রে, চারিদিকে বিসৰ্পিত হ’য়ে পড়ে এবং সংসার-সীমা অতিক্রম ক’রে, পারলৌকিক রহস্যের বাধ ছাপিয়ে, অন্তহীন-নিৰ্ব্বিকার প্রেমের অসীমঅগাধ-প্ৰশান্ত মহাসাগরে আত্মবিসৰ্জন করে । সু। সেটা কি আর বিয়ে না ক’রলে হ’তে পারে না ? বিয়ে তি প্রায় সবাই করে, “ক’জনের জীবনে ঈশ্বরপ্রেমের বান ডাকে, দাদা ? সবারই ত জীবনের ক্ষীণ ধারা, ঘোলা জলের প্রবাঙ্গ নিয়ে সংসারের সঙ্কীর্ণ পথেই পড়ে থাকে । আচ্ছা, দু’টো ভাঙ্গা জিনিসে জোড় মিলিয়ে, একটা ছোট আধখানার সঙ্গে আর একটা ছোট আধখানাকে মিশিয়ে, একটা ছোট-সান্ত-সীমাবদ্ধ খণ্ড-পূর্ণতা পাবার চেষ্টা না ক’রে, হৃদরের প্রণয়প্রবৃত্তিকে একবারেই ঈশ্বরের দিকে ফিরিয়ে দিয়ে অন্তহীন- অসীম— অখণ্ড পূর্ণতা পা’বার জন্যে চেষ্টা করাই কি ভাল নয়, দাদা ?” বিরাজ উত্তর করিতে যাইতেছিল; সেই সময়ে হীরালালকে সঙ্গে লইয়া, ৩° ] f