পাতা:করিম সেখ - জলধর সেন.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিম সেখ বসিয়া কোপিতেছিল। তাহার তখন কথা বলিবার শক্তি, ছিল না । যাহারা তাহার। চীৎকার শব্দ শুনিয়া বাহির হইয়া আসিয়াছিল; তাহাদের মধ্যে একজন বলিল “ও বসির, বসির, অমন কছিলকেন ? কি হয়েছে?” বসিরের মুখে আর কথা নাই। তখন ঘরের মধ্য হইতে আলো বাহির করিয়া সকলে দেখে ৰসির খরথার কঁাপিতেছে, তাহার সর্বাঙ্গ ঘামে ভিজিয়া গিয়াছে। সকলেই তখন বলিতে লাগিল “ভয় কি, বসির, ভয় কি। তুই স্বপন দেখে চেচিয়ে উঠেছিলি। ভয় কি ?” লোকের কথা শুনিয়া বসির একবার চারিদিকে চাহিয়া দেখিল ; সে যেন কিছুই বুঝিতে পারিল না। সে তখন চক্ষু মুদিয়া শুইয়া পড়িল ; তাহার পরই অনুচ্চস্বরে কাদিতে আরম্ভ করিল। সকলেই সাস্তুনা দিতে লাগিল, সকলেই বলিতে লাগিল ‘বসির, কাঁদিস কেন ? তুই স্বপ্ন দেখেছিস।” বসিরের কান্না আর থামে না। বিপিন বাবু তখন অন্য ঘরে। কাৰ্য্যান্তরে ব্যাপৃত ছিলেন। তিনি শুনিতে পাইলেন যে, বসির স্বপ্ন দেখিয়া কাদিতে আরম্ভ করিয়াছে, কিছুতেই তাহার কান্না থামিতেছে না। বিপিন বাবু বসিরকে ডাকিলেন, বিসির সে ডাক শুনিল না ; সে আরও কাঁদিতে, লাগিল। অগত্যা বিপিন বাবুঘর হইতে বাহির হইয়া কাছারীর বারান্দায় আসিয়া বলিলেন, “ও বসির, কি হ’য়েছে; কাঁদছিল। কেন ?” বসির তখন আর স্থির থাকিতে পারিল না। বিপিন বায়ুর স্নেহপূর্ণ আহবান যেন তাহার তপ্ত হৃদয়ে শীতল জল ঢালিয়া দিল। সে তখন উঠিয়া বসিল; পরিধেয় বস্ত্ৰে চক্ষের জল মুছিয়া ফেলিল ।