পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৩৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশ পরিচ্ছেদ eq 39

অনুরোধে ক্ষিপ্তপ্রায় সেনাদল শান্ত হইল বটে কিন্তু তাহারা একে একে দুর্গ আক্রমণের অনুমতি প্রার্থনা করিল। এই সময়ে দুর্গশীর্ষে গুপ্তবংশের কে তন দৃষ্ট হইল, তাহা দেখিয়া সৈনিকগণ বার বার উচ্চ জয়ধ্বনিতে গগন বিদীর্ণ করিল। সঙ্গস এক বুদ্ধ মাগধ সেনা সম্রাটের অশ্বের বয়া ধারণ করিল, তাহা দেখিয়া চমকিত হইয়া চর্য গুপ্ত ও বন্ধুবৰ্ম্ম অসি গ্রহণ করিলেন । বুদ্ধ অভিবাদন করিয়া কহিল, “মহারাজাধিরাজ, আমি হরিবলের অনুচর নহি, সিপ্রা ও শুভ্ৰামতী, বক্ষু ও বাহুলীকাতীরে গোবিন্দ গুপ্তের অধীনে যুদ্ধ করিয়াছি । মহারাজ, মগধ আজি যাহা হারাইল, তাতা আর ফিরিয়া আসিবে না । মৃত্যুযন্ত্রণাও গোবিন্দ গুপ্তকে শিথিলমষ্টি করে নাই। দেখিয়াছিলে কি, ভানুমিত্র যখন মহারাজপুত্রের দেহ উদ্ধে উত্তোলন করিয়াছিল, বামহস্ত তখন ও গরুড়ধ্বজ পরিত্যাগ করে নাই । মঙ্গরাজ, স্মরণ রাখি ও ” সৈনিক এই বলিয়া পুনরায় অভিবাদন করিল এবং ক্ষিপ্ৰপদে জনতায় মিশিয়া গেল। দুর্গ অধিকৃত হইলে সৰ্ব্বাগ্রে বন্ধুবৰ্ম্মা, চক্রপালিত ও হর্ষ গুপ্তের সহিত স্কন্দ গুপ্ত গোপাদ্রি তর্গে প্রবেশ করিলেন । দুর্গশীর্ষে উড়ীয়মান পতাকার নিয়ে শুভ্ৰবসনপরিঙ্গিত ভানুমিত্র দাড়াইয়াছিলেন, তিনি সম্রাটুকে আহবান করিলেন। স্কন্দ গুপ্ত প্রাকারে আরোহণ করিয়া দেখিলেন এক সৈনিকের বক্ষে মস্তক রক্ষা করিয়া মুমৰ্ম্ম গোবিন্দগুপ্ত শয়ান । সম্রাট ও, হর্ষ গুপ্ত মহারাজপুত্রের পদদ্বয় ধারণ করিয়া উপবেশন করিলেন । শোণিতে প্রাকার প্লালিত হইয়াছিল, মরণকাতর বৃদ্ধ অঞ্জলি ভরিয়া আত্মঃশাণিত গ্রহণ করিয়া ধীরে ধীরে কহিলেন, “পুত্র, কুমার গুপ্ত কাপুরুষ ছিল না, হরিবলের চক্রান্তে জ্যেষ্ঠের পদস্খলন হইয়াছিল, অদ্য এই গুপ্ত-শোণিতাঞ্জলি দিয়া তাঙ্গর প্রায়শ্চিত্ৰ করিলাম। বুদ্ধের অপরাধ গ্রহণ করি ও না।” বুদ্ধের পদে কয়েক বিন্দু তপ্ত অশ্র পতিত হইল, তিনি বহু কষ্ট্রে মুখ তুলিয়া দেখিলেন, পদপ্রান্তে