পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/২৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৫২ এত শুনি কছে রাজ হইয়া উল্লাস । প্রসাদ যে চাহ তুমি লও মম পাশ । নল বলে কাৰ্য্যসিদ্ধ করিয়া তোমার । তবে রাজা মাগিব প্রসাদ আপনার ॥ এত বলি অশ্বশালে প্রবেশ করিল। একে একে সকল তুরঙ্গ নিরখিল ॥ দেখিতে শরীর কৃশ সিন্ধুদেশী ঘোড় । বাছিয়া বাহির কৈল নল দুই ঘোড় ॥ ঘোড়া দেখি ঋতুপর্ণ আরক্ত লোচন । বাহুকের প্রতি বলে কঠিন বচন ॥ সহস্ৰ সহস্র মম আছে অশ্বগণ । পাৰ্ব্বতীয় ঘোড়া সব পবন গমন ॥ তাহ ছাড়ি ইনশক্তি দুৰ্ব্বল আনিলে । কেমনে বাহিবে পথ কিমতে বুঝিলে ॥ বাহুক বলিল যদি যাইবে রাজন । আমার বচনে কর রথ আরোহণ ॥ ইহা ভিন্ন অন্য ঘোড়া না পারে যাইতে । এত বলি চারি ঘোড়া যুড়িলেক রথে ॥ চালাইয়া দিল রথ বাহুক সারথি । শূন্তেতে উঠিল ঘোড়। বায়ু সম গতি ॥ কোথায় রহিল রথ কোথা সৈন্যগণ । বিস্ময় মানিয়া রাজা ভাবে মনে মন ॥ এই কি মাতলি যে সারথি পুরুহুত । অশ্বিনীকুমার কিম্ব, আপনি মরুত ॥ হেন শক্তি নাহি কার পৃথিবীমণ্ডলে । মানুষের মধ্যে শক্তি ধরে রাজা নলে ॥ নল রাজা বিন। আর নহিবেক আন । বায্য ধৈয্য ভাষা গুণ নলের সমান ॥ কেবল দেখিতে পাই কুৎসিত আকার । ছদ্মবেশে হইয়াছে সারথি আমার ॥ হেনকালে নৃপতির পড়িল উত্তরী। বাহুকে বলিল রথ রাখ অশ্ব ধরি ॥ উওরি লইতে রাজ। পাছু পানে চায় । বাহুক বলিল হেথা উত্তরা কোথায় ॥ পঞ্চ যোজনের পথ উত্তর রহিল । শুনি ঋতুপর্ণ রাজা বিস্ময় মানিল ॥ কলি দেখি নরপতি ক্রোধে কম্পকায় । হাতে খড়গ করিলেন কাটিবারে তায় । স্বধাপ্লাবিত ভূপৃষ্ঠা-মাদ্রগন্ধামুলেপনাং । [ মহাভারত । -=ജ് রাজ বলে বাহুক শুনহ মম বাণী । আমি এক দ্রব্যসংখ্যা বিদ্যা ভাল জানি । গণিতে সৰ্ব্বজ্ঞ নাহি আমার সমান । এই বৃক্ষে পত্র ফল বুঝ পরিমাণ ॥ পঞ্চকোটি পত্র অাছে দুই কোটি ফল । এত শুনি বলিল নিষধ রাজা নল ॥ হেন বিদ্যা নাহি যাহা আমি নাহি জানি । পরীক্ষিব তব বিদ্যা ফল পত্র গণি । রাজা বলে চল শীঘ্ৰ বিলম্ব না সয় । নিকট হইল স্বয়ম্বরের সময় ॥ স্বয়স্বর হইতে আসিব নিবভিয়া । তবে মম বিদ্যা তুমি বুঝিবে গণিয়া ॥ বাহুক বলিল যে কুণ্ডিন অল্প পথ । না পোহাবে রজনী লইব আমি রথ । মুহূৰ্ত্তেক রথ অশ্ব ধর নরবর। ফল পত্র গণি আমি আসিব সত্বর ॥ এতেক বলিয়। গেল অশ্বথের তল । গণিয়া বুঝিৰ যে হইল পত্র ফল ॥ বিস্ময় মানিয়া বলে নল নরপতি । এই বিদ্য। আমারে বিতর নরপতি । অশ্ব বিদ্যা মন্ত্র যদি শিখাও আমারে । আমি এ গণনা বিদ্যা শিখাই তোমারে । স্বীকার করিল নল করাইব শিক্ষা । তবে ঋতুপর্ণ কাছে কৈল মন্ত্র দীক্ষা ॥ মহামন্ত্র দীক্ষা যদি করিলেক নল । শরীরে আছিল কলি হইল বিকল ॥ একে কর্কটের বিষ জরজর দহে । অধিক রাজার মন্ত্র কলি স্থির নহে ॥ সেইক্ষণে অঙ্গ হৈতে হইয়া বাহির । মুখেতে গরল বহে কম্পিত শরীর ॥ কৃতাঞ্জলি করি কলি বলে সবিনয় । মোরে না করিব নাশ শুন মহাশয় ॥ দময়ন্তী শাপে মম সদা পুড়ে অঙ্গ । বিশেষ দংশিল মোরে কর্কট ভুজঙ্গ ॥