পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০]
কুরু পাণ্ডব
১৭১

 তদ্দর্শনে অর্জ্জুন অত্যন্ত লজ্জিত ও প্রিয়বন্ধুর নিরাশ্রয়ভাবে শত্রুমধ্যে গমনে শঙ্কিত হইয়া সত্বর রথ হইতে অবতরণপূর্ব্বক তৎপশ্চাতে ধাবিত হইলেন এবং কৃষ্ণ শতপদ অগ্রসর না হইতেই তাঁহার বাহুযুগল ধারণ করিলেন, কিন্তু ক্রোধ-প্রজ্বলিত বাসুদেব ধৃত হইলেও অর্জ্জুনকে আকর্ষণপূর্ব্বক তাঁহাকে লইয়াই বেগে গমন করিতে লাগিলেন। তখন অর্জ্জুন নিরুপায় হইয়া তাঁহার পদদ্বয় গ্রহণপূর্ব্বক অতি বিনীতচনে সেই আরক্তনয়ন বীরকে কহিলেন—

 হে মহাবাহো! নিবৃত্ত হও, তুমি যুদ্ধে যােগদান করিয়া প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিলে তোমার চিরস্থায়ী অকীর্ত্তি এবং তন্নিমিত্ত আমার লজ্জার সীমা থাকিবে না। আমার প্রতি যখন সমস্ত ভার অর্পিত আছে, তখন আমিই পিতামহকে সংহার করিব।

 কৃষ্ণ অর্জ্জুনের বাক্যে কোন প্রত্যুত্তর না করিয়া আশীবিষের ন্যায় শ্বাস পরিত্যাগ করিতে করিতে পুনরায় রথারােহণ করিলেন। কিন্তু ইত্যবসরে ভীষ্ম সৈন্যদলকে এতই উৎপীড়ন করিয়াছিলেন যে, তাহারা কেহই সে স্থানে আর অবস্থান করিতে সক্ষম হয় নাই। যুধিষ্ঠির অর্জ্জুনের ঔদাসীন্যহেতু একান্ত বিষণ্ণচিত্ত হইয়া এবং সূর্য্যাস্তকাল আগতপ্রায় দেখিয়া আর বিলম্ব না করিয়াই অবহারের আদেশ করিলেন।

 সেই রাত্রে যুধিষ্ঠির সকলকে মন্ত্রণার্থে আহ্বান করিয়া কৃষ্ণকে কহিতে লাগিলেন―