পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
কুরু পাণ্ডব

 সভাময় মহা হুলস্থুল পড়িয়া গেল। দেবগণ অর্জ্জুনের মস্তকোপরি পুষ্পবর্ষণ করিতে লাগিলেন। সহস্র সহস্র ব্রাহ্মণ স্বীয় উত্তরীয় অজিন বিধুননপূর্ব্বক মহােল্লাস প্রকাশ করিতে লাগিলেন। বাদকগণ শতাঙ্গ তূর্য্য বাদন এবং সুকণ্ঠ সূত ও মাগধগণ স্তুতিপাঠ করিতে আরম্ভ করিল।

 কৃষ্ণা অর্জ্জুনের অতুলকান্তি সন্দর্শনে সহর্ষে তাঁহার গলে বরমাল্য অর্পণ করিলেন। দ্রুপদরাজও পার্থের অসাধারণ বল ও অদ্ভুত কৌশলে প্রীত হইয়া তাঁহাকে কন্যাদানের আয়ােজনে প্রবৃত্ত হইলেন।

 এদিকে পুত্রগণ ভিক্ষার্থে গমন করিয়া এত বিলম্বেও প্রত্যাবর্ত্তন না করায় পৃথা কুম্ভকারের গৃহে চিন্তিতাবস্থায় কালক্ষেপ করিতেছিলেন। রাত্রি যখন আগতপ্রায় তখন কৃষ্ণাকে লইয়া পাণ্ডবগণ ভার্গবালয়ের নিকটবর্ত্তী হইলেন। গৃহের দ্বারে উপস্থিত হইয়াই উৎফুল্লবচনে তাঁহারা নিবেদন করিলেন―

 মাতঃ! অদ্য এক পরমরমণীয় বস্তু ভিক্ষালব্ধ হইয়াছে।

 পৃথা গৃহাভ্যন্তর হইতে সবিশেষ বিবেচনা না করিয়াই প্রত্যুত্তর করিলেন―

 বৎসগণ! যাহা প্রাপ্ত হইয়াছ, সকলে মিলিয়া তাহা ভোগ কর।

 পরে কৃষ্ণাকে নয়নগোচর করিয়া—আমি কি কুকর্ম্ম করিলাম― ভাবিয়া তিনি যুধিষ্ঠিরকে কহিলেন―

 হে পুত্র! তােমরা কি আনিয়াছ না জানায়, আমি সকলে