পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&ఫిE গলপথচ্ছে শইলাম। অধোঁক রাত্রে পটল কহিল, ওগো, কাল সকালে গেলে কুড়ানিকে দেখিতে পাইব না— আমাকে এখনই যাইতে হইবে। পটলকে কিছতেই বুঝাইয়া রাখা গেল না— তখনই একটা গাড়ি করিয়া বাহির হইয়া পড়িয়াছি।” পটল হরকুমারকে কহিল, “চলো, তুমি যতীনের বিছানায় শোবে চলো।” হরকুমার ঈষৎ আপত্তির আড়ম্বর করিয়া যতীনের ঘরে গিয়া শুইয়া পড়িলেন, তাঁহার নিদ্রা যাইতেও দেরি হইল না। পটল ফিরিয়া আসিয়া যতীনকে ঘরের এক কোণে ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “আশা আছে ?” যতীন কুড়ানির কাছে আসিয়া তাহার নাড়ী দেখিয়া মাথা নাড়িয়া ইঙ্গিতে জানাইল যে, আশা নাই। পটল কুড়ানির কাছে আপনাকে প্রকাশ না করিয়া যতীনকে আড়ালে লইয়া কহিল, "যতীন, সত্যু বলে, তুমি কি কুড়ানিকে ভালোবাস না।” যতীন পটলকে কোনো উত্তর না দিয়া কুড়ানির বিছানার পাশে আসিয়া বসিল। তাহার হাত চাপিয়া ধরিয়া নাড়া দিয়া কহিল, "কুড়ানি, কুড়ানি।” কুড়ানি চোখ মেলিয়া মুখে একটি শান্ত মধর হাসির আভাসমাত্র আনিয়া কহিল, “কী, দাদাবাব।” ষতীন কহিল, “কুড়ানি, তোমার এই মালাটি আমার গলায় পরাইয়া দাও।” কুড়ানি অনিমেষ অবাক চোখে যতীনের মুখের দিকে তাকাইয়া রহিল। যতীন কহিল, “তোমার মালা আমাকে দিবে না ?” যতীনের এই আদরের প্রশ্রয়ট কু পাইয়া কুড়ানির মনে পবেীকৃত অনাদরের একটনখানি অভিমান জাগিয়া উঠিল। সে কহিল, "কী হবে, দাদাবাব।" যতীন দই হাতে তাহার হাত লইয়া কহিল, “আমি তোমাকে ভালোবাসি, কুড়ানি।” শনিয়া ক্ষণকালের জন্য কুড়ানি সন্তব্ধ রহিল; তাহার পরে তাহার দুই চক্ষ দিয়া অজস্র জল পড়িতে লাগিল। যতীন বিছানার পাশে নামিয়া হাঁট গাড়িয়া বসিল, কুড়ানির হাতের কাছে মাথা নত করিয়া রাখিল। কুড়ানি গলা হইতে মালা খলিয়া যতীনের গলায় পরাইয়া দিল। তখন পটল তাহার কাছে আসিয়া ডাকিল, “কুড়ানি।” কুড়ানি তাহার শীর্ণ মখ উজ্জল করিয়া কহিল, “কণী, দিদি।" পটল তাহার কাছে আসিয়া তাহার হাত ধরিয়া কহিল, "আমার উপর তোর আর কোনো রাগ নাই, বোন ?" কুড়ানি স্নিগ্ধকোমল দটিতে কহিল, “না দিদি।" পটল কহিল, “যতীন, একবার তুমি ও ঘরে যাও।” যতীন পাশের ঘরে গেলে পটল ব্যাগ খলিয়া কুড়ানির সমস্ত কাপড়-গহনা তাহার মধ্য হইতে বাহির করিল। রোগিণীকে অধিক নাড়াচাড়া না করিয়া একখানি লাল বেনারসি শাড়ি সন্তপণে তাহার মলিন বম্মের উপর জড়াইয়া দিল। পরে একে একে এক-একগাছি চুড়ি তাহার হাতে দিয়া দই হাতে দই বালা পরাইয়া দিল। তার পরে ডাকিল, “যতীন।” যতীন আসিতেই তাহাকে বিছানায় বসাইয়া পটল তাহার হাতে কুড়ানির একছড়া