পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ ළුV তারাপ্রসনের কীতি লেখকজাতির প্রকৃতি অনুসারে তারাপ্রসন্ন কিছু লাজকে এবং মুখচোরা ছিলেন। লোকের কাছে বাহির হইতে গেলে তাঁহার সবনাশ উপস্থিত হইত। ঘরে বসিয়া কলম চালাইয়া তাঁহার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, পিঠ একটী কুজা, সংসারের অভিজ্ঞতা অতি অলপ। লৌকিকতার বাঁধি বোল-সকল সহজে তাঁহার মুখে আসিত না, এইজন্য গহদগের বাহিরে তিনি আপনাকে কিছুতেই নিরাপদ মনে করিতেন না। লোকেও তাঁহাকে একটা উজবক-রকমের মনে করিত, এবং লোকেরও দোষ দেওয়া যায় না। মনে করো, প্রথম পরিচয়ে একটি পরম ভদ্রলোক উচ্ছসিত কঠে তারাপ্রসন্নকে বলিলেন, "মহাশয়ের সহিত সাক্ষাৎ হয়ে যে কণী পর্যন্ত আনন্দ লাভ করা গেল তা একমুখে বলতে পারি নে— তারাপ্রসন্ন নিরত্তের হইয়া নিজের দক্ষিণ করতল বিশেষ মনোযোগপর্বক নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। হঠাৎ সে নীরবতার অর্থ এইরুপ মনে হয়, তা তোমার আনন্দ হয়েছে সেটা খুব সম্ভব বটে, কিন্তু আমার যে আনন্দ হয়েছে এমন মিথ্যা কথাটা কী করে মুখে উচ্চারণ করব তাই ভাবছি।’ মধ্যাহ্নভোজে নিমন্ত্রণ করিয়া লক্ষপতি গহ্বামী যখন সায়াহ্নের প্রাক্কালে পরিবেশন করিতে আরম্ভ করেন এবং মধ্যে মধ্যে বিনীত কাকুতি-সহকারে ভোজ্যসামগ্রীর অকিঞ্চিৎকরত্ব সম্বন্ধে তারাপ্রসন্নকে সম্বোধনপবেক বলিতে থাকেন এ কিছুই না। অতি যৎসামান্য। দরিদ্রের খন্দকুড়া, বিদরের আয়োজন। মহাশয়কে কেবলই কষ্ট দেওয়া’— তারাপ্রসন্ন চুপ করিয়া থাকেন, যেন কথাটা এমনি প্রামাণিক যে তাহার আর উত্তর সম্পভলে না । মধ্যে মধ্যে এমনও হয়, কোনো সশীল ব্যক্তি যখন তারাপ্রসন্নকে সংবাদ দেন যে, তাহার মতো অগাধ পণ্ডিত্য বৰ্তমানকালে দলভ এবং সরস্বতী নিজের পহ্মাসন পরিত্যাগপবেক তারাপ্রসক্সের কন্ঠাগ্রে বাসস্থান গ্রহণ করিয়াছেন, তখন তারাপ্রসন্ন তাহার তিলমাত্র প্রতিবাদ করেন না, যেন সত্যসত্যই সরস্বতী তাঁহার কন্ঠরোধ করিয়া বসিয়া আছেন। তারাপ্রসপ্লর এইটে জানা উচিত যে, মুখের সামনে যাহারা প্রশংসা করে এবং পরের কাছে যাহারা আত্মনিন্দয় প্রবন্ত হয়, তাহারা অন্যের নিকট হইতে প্রতিবাদ প্রত্যাশা করিয়াই অনেকটা অসংকোচে অতু্যক্তি করিয়া থাকে— অপর পক্ষ BBBB BB BBB BB BBBBBB BBB BBS BB BB BBBB BBBB জ্ঞান করিয়া বিষম ক্ষন্ধে হয়। এইরুপ পথলে লোকে নিজের কথা মিথ্যা প্রতিপন্ন হইলে দুঃখিত হয় না। ঘরের লোকের কাছে তারাপ্রসলের ভাল অন্যরাপ: এমনকি, তাঁহার নিজের সী দাক্ষায়ণীও তাঁহার সহিত কথায় অটিয়া উঠিতে পারেন না। গহিণী কথায় কথায় বলেন, “নেও নেও, আমি হার মানলাম। আমার এখন অন্য কাজ আছে।” বাগষদ্ধে স্মীকে আত্মমুখে পরাজয় স্বীকার করাইতে পারে, এমন ক্ষমতা এবং এমন সৌভাগ্য কয়জন সলামীর আছে। তারাপ্রসলের দিন বেশ কাটিয়া যাইতেছে। দাক্ষায়ণীর দঢ় বিশ্বাস, বিদ্যাবধিক্ষমতায় তাঁহার স্বামীর সমতুল্য কেহ নাই এবং সে কথা তিনি প্রকাশ করিয়া বলিতেও