বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

እ8kም গল্পসংগ্ৰহ পাকা কথা দিয়ে এলেন। স্থির হল, ক্ষেত্রপতি তঁর বিগত স্ত্রীর আদ্যশ্ৰাদ্ধ করেই, আগত স্ত্রীকে ঘরে আনবেন। ক্ষেত্রপতির এ বিবাহ করবার আগ্রহের একমাত্র কারণ, শ্ৰীমতী সুন্দরী এবং কিশোরী। সুন্দরী স্ত্রীলোককে হস্তগত করবার লোভ ক্ষেত্রপতি জীবনে কখনও সংবরণ করতে পারেননি ; এবং এ ক্ষেত্রে বিবাহ ছাড়া শ্ৰীমতীকে আত্মসাৎ করবার উপায়ান্তর নেই জেনে, তিনি তাকে বিবাহ করতে প্ৰস্তুত হলেন । এ বিষয়ে তঁর কোন দ্বিধা হল না, কেননা, তিনি লোকনিন্দাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করতেন। তিনি গ্রামের কাউকেও ভয় করতেন না, সকলে তঁকে ভয় করত ; তার কারণ, তিনি পুলিশে চাকরি করতেন, তার উপর তার দেহে বল, মনে সাহস ও ঘরে টাকা ছিল। এ তিন বিষয়ে গ্রামের কেউ তার সমকক্ষ छिव्ल •ा । শ্যামলালের খুড়ে তাঁকে এসে যখন জানালেন যে, তিনি ক্ষেত্রপতিকে পাকা কথা দিয়ে এবং বিয়ের দিন স্থির করে এসেছেন, তখন শ্যামলাল বললেন, “আপনি যাই বলুন আর না বলুন, আমি এ বিবাহ কিছুতেই হতে দেব না, প্ৰাণ গেলেও নয়।” এ কথা শুনে খুড়োমহাশয়-“ভদ্রলোককে কথা দিয়ে সে কথার আর কিছুতেই অন্যথা করা যেতে পারে না,” এই বলে চীৎকার করতে লাগলেন। বাড়ীতে হুলস্থূল পড়ে গেল। কিন্তু শ্যামলাল যে সেই “না” বলে চুপ করলেন, তারপর আর কোন কথা কইলেন না। তার কারণ, হাজার চীৎকার করলেও তার খুড়োর কোন কথা শ্যামলালের কাণে দুকছিল না; তাঁর শরীর মন ইন্দ্ৰিয় সব একেবারে অবশ অসাড় হয়ে গিয়েছিল, মাথায় বজাঘাত হলে মানুষের যেমন হয়। এ মহাসমস্যার মীমাংসা শ্ৰীমতী করে দিলে। সকলের সকল কথা শুনে, সকল অবস্থা জেনে, শ্ৰীমতী বললে এ বিবাহ সে করবেই। সে বুঝেছিল যে, তার বিবাহ না হওয়া তক তার বাপের বিড়ম্বনার আর শেষ হবে না। তা ছাড়া সে কোন দুঃখকষ্টকেই আর ভয় করত না, বরং তার মনে হত যে তার পক্ষে জীবনে নিজে সুখী হবার ইচ্ছাটাও