পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8y * গল্পসংগ্ৰহ বীণার মুক্তি এর পরে বীণা বললেন-“যাও ঘোষাল, আমার বীণাটি নিয়ে এস -আর ওষুধের শিশিটাও । এখন আমার বুকের ভিতর হৃদয়টা, তাণ্ডবনৃত্য করছে। যদি বীণার বশীকরণ মন্ত্রে নৃত্যকে বশীভূত করতে না পারি, তাহলে ওষুধ খেয়ে হৃদয়টা সায়েস্তা করব।” আমি বীণার ঘর থেকে ওষুধ ও বীণা দুই নিয়ে এলুম। আমি ফিরে আসবামাত্র “শ্বসিত কম্পিত পীনঘনন্তনী” বীণা নিজের হৃদয়কে “শান্ত হ পাপ” এই আদেশ করে, আমাকে বললেন—“তোমার মুখে একটি কথা শুনতে চাই ; তারপর বীণা বাজাব, তারপর ওষুধ গলাধঃকরণ করব। এখন আমার জিজ্ঞাস্য এই—যার মায়ায় তুমি উদভ্ৰান্ত ও উন্মাৰ্গগামী হয়েছিলে, সে মায়াবিনী কি তোমাকে আমার চাইতেও বেশী মুগ্ধ করেছিল ?--না, তা হতেই পারে না। আমার মোহিনী শক্তি আর কেউ না জানুক, তুমি ত জান। এখন বীণাটি দেও। তোমাকে এই শেষ রাত্তিরে একটি আশাবরী শোনােব, যা আমার বীণার মুখে। কখনও শোননি।” এই বলে তিনি বীণাটি বুকে তুলে নিয়ে “নৈয়া ঝাঁঝরি” বীণার মুখ দিয়ে আমাকে শোনালেন। এ বাজনা শুনে রাধা কৃষ্ণের বঁাশী সম্বন্ধে যা বলেছিলেন, তাই আমার মনে পড়ল,-“মনের আকুতি বেকত করিতে কত না সন্ধান জানে।” বাজান শেষ হলে বীণা বললেন,- এই গানটি তোমার মুখে প্রথম শুনি, আর বীণার মুখে এই শেষ শুনলে। হৃদয়ের এই উদ্দাম তোলপাড় ওষুধে আর থামবে না ; আর যখন থামবে, একেবারেই থামবে। এই হচ্ছে আমার premonition । তুমি আমার পাণিগ্রহণ করে, J mean হাত ধরে, আমাকে সুমুখের চৌকাঠটা পার করে দেও। আমি তার হাত ধরে শোবার ঘরের চৌকাঠটি পার করে দিলুম। tes দুকেই বললে,-যতগুলো বাতি আছে সব জ্বেলে দেও