অর্জুন। হে সুন্দরী, উন্মথিত যৌবন আমার
সন্ন্যাসীর ব্রতবন্ধ দিল ছিন্ন করি।
পৌরুষের সে অধৈর্য
তাহারে গৌরব মানি আমি—
আমি তো আচারভীরু নারী নহি
শাস্ত্রবাক্যে-বাঁধা।
এসো সখী, দুঃসাহসী প্রেম
বহন করুক আমাদের
অজানার পথে।
চিত্রাঙ্গদা। তবে তাই হোক
কিন্তু মনে রেখো,
কিংশুকদলের প্রান্তে এই-যে দুলিছে
একটু শিশির— তুমি যারে করিছ কামনা
সে এমনি শিশিরের কণা
নিমিষের সোহাগিনী।
কোন্ দেবতা সে কী পরিহাসে ভাসালো মায়ার ভেলায়
স্বপ্নের সাথি, এসো মোরা মাতি স্বর্গের কৌতুকখেলায়।
সুরের প্রবাহে হাসির তরঙ্গে
বাতাসে বাতাসে ভেসে যাব রঙ্গে নৃত্যবিভঙ্গে,
মাধবীবনের মধুগন্ধে মোদিত মোহিত মন্থর বেলায়।
যে ফুলমালা দুলায়েছ আজি রোমাঞ্চিত বক্ষতলে,
মধুরজনীতে রেখো সরসিয়া মোহের মদির জলে।
নবোদিত সূর্যের করসম্পাতে
বিকল হবে হায় লজ্জা-আঘাতে,
দিন গত হলে নূতন প্রভাতে
মিলাবে ধুলার তলে কার অবহেলায়।