পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিজয়া।

ছোরা বাহির করিল, তাহা কাপড়ের মধ্যে লুকাইয়া ঘর ইইতে বাহির হইয়া গেল।

 পূজাবাড়ী নিস্তব্ধ। পরিশ্রান্ত হইয়া যে যেখানে স্থান পাইয়াছে, সে সেইখানে শয়ন করিয়াছে। ঝড়ে আলোগুলি নিবিয়া গিয়াছে। তখনও বাতাস বহিতেছে, ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়িতেছে, ঘন অন্ধকার জমাট বাঁধিয়া আছে। দুয়ারে কেহই নাই, পূজার দালানে কতকগুলা কুকুর আশ্রয় লইয়াছে।

 একজন লোক কাপড় মুড়ি দিয়া ধীরে ধীরে পূজা বাড়ীতে প্রবেশ করিল, তাহাকে কেহই দেখিতে পাইল না। লোকটি সদর দরজা পার হইয়া গেল, বৈঠক থানার ভিতরে প্রবেশ করিল। বারান্দায় কেহই ছিল না, বৃষ্টির ভয়ে ঘরে আশ্রয় লইয়াছিল, লোকটি একটি একটি করিয়া সকল ঘরে প্রবেশ করিল, আবার বাহির হইয়া আসিল, তাহার পরে বৈঠকখানা পরিত্যাগ করিয়া অন্দরের দিকে চলিল।

 পূজার দালানের সংলগ্ন একটি ঘরে কিশোর বসিত, লোকটি সেই ঘরে প্রবেশ করিল, দেখিল বিছানার উপরে কে একজন শুইয়া আছে, আর ঘরের কোণে মিটমিট করিয়া একটা হরিকেন জ্বলিতেছে। সে ব্যক্তি আলোটি উঠাইয়া লইয়া নিদ্রিতের মুখের নিকট ধরিল, সে বিরক্ত হইয়া বলিয়া উঠিল “এত ভোরে আমি উঠিতে পারিব না।” এই বলিয়া সে পাশ ফিরিয়া শুইল,—সে ব্যক্তি কিশোরী। নবাগত ব্যক্তি গায়ের কাপড় খুলিয়া কোমরে বাঁধিল, তাহার পর ছোরা-খানি হাতে লইয়া ফিরিয়া গেল, তাহার পর কিশোরীর ঘাড় ধরিয়া জোরে একটা ধাক্কা দিল। সে তাড়াতাড়ি উঠিয়া বসিল, দেখিল সম্মুখে জয়চাঁদ, তাহার মূর্ত্তি

১১১