পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চাঁদে মানুষ আছে কি?
৮৭

করিয়া সেখানে গাছপালা থাকিতে পারে, তোমরাই একটু ভাবিয়া দেখ। এমন সোনার চাঁদে যদি জল ও বাতাস থাকিত, তাহা হইলে হয় ত আমাদের মত মানুষ সেখানে বাস করিত এবং হয় ত এতদিনে চাঁদের মানুষদের সঙ্গে বিনা-তারের টেলিগ্রাফে বা অন্য কোনো উপায়ে কথাবার্ত্তাও চালাচালি হইত। চাঁদের মাটি-পাথর পৃথিবীর মাটি-পাথরের মত হইলেও সেখানে জীব-জানোয়ারের থাকিবার উপায় নাই। যদি কেহ জোর করিয়া আমাদিগকে চাঁদে লইয়া যায়, তাহা হইলে দম আটকাইয়া আমাদের প্রাণ বাহির হইয়া পড়িবে; ইহাতেও যদি কোনো গতিকে বাঁচা যায়, তাহা হইলে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় নিশ্চয় মৃত্যু হইবে। জল নাই—তরি-তরকারী ধান চাল গম কিছুই নাই, তবে কি থাইয়া বাঁচা যাইবে বল দেখি? তাহার উপরে আবার আগুন জ্বালিবার কোনো উপায় নাই। কারণ একটুও বাতাস নাই; বাতাস না থাকিলে ত আগুন জ্বলে না।

 তার পর দেখ, আমরা দু-চার জন যে চাঁদে গিয়া কথাবার্ত্তা গল্পগুজব করিব তাহারো উপায় নাই; কারণ চাঁদে বাতাস নাই, কাজেই শব্দও হইতে পারে না। তুমি চাঁদে গিয়া খুব করিয়া চীৎকার কর, একটুও শব্দ হইবে না; হাজারটা কামান এক সঙ্গে ছুঁড়িলেও একটু শব্দ হইবে না। ভাবিয়া দেখ, চাঁদের রাজ্যটা কি ভয়ানক স্থান! যুগযুগান্তর ধরিয়া চাঁদের উপরকার সকলি স্তব্ধ ও নিশ্চল। কি ভয়ানক অবস্থা! এই জন্যই জ্যোতিষীরা চাঁদকে মৃত উপগ্রহ বলিয়াছেন। এমন সুন্দর চাঁদের এমন দুরবস্থার কথা শুনিলে বাস্তবিকই দুঃখ হয়।