পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বৃহস্পতি
১৩৫

কোমরবন্ধের মত দেখা যাইতেছে। যদি দূরবীণ দিয়া তোমরা বৃহস্পতিকে দেখিতে পার, তাহা হইলে পৃথিবীর মেঘের মত ইহার মেঘগুলিকে চলিতে ফিরিতে দেখিবে।

 ছবির উপরের দিকে একটা বাদামি আকারের দাগ দেখিতে পাইতেছ কি? তোমরা হয় ত উহাকে মেঘ ভাবিতেছ,—কিন্তু মেঘ নয়। জিনিসটা যে কি, তাহা আমিও তোমাদিগকে ঠিক্ বলিতে পারিব না। জ্যোতিষীরাও উহার কথা ঠিক্ বলিতে পারেন নাই।

 প্রায় চল্লিশ বৎসর পূর্ব্বে হঠাৎ একদিন বৃহস্পতির গায়ে ঐ দাগটি দেখা গিয়াছিল। জ্যোতিষীরা ভাবিয়াছিলেন, হয় ত উহা একখানা বড় মেঘ। কিন্তু দুই তিন বৎসরেও যখন উহার আকারের কোনো বদল হইল না, তখন তাঁহারা চিন্তিত হইয়া পড়িলেন। হিসাব করিয়া দেখা গেল, উহা বৃহস্পতির উপরে প্রায় ত্রিশ হাজার মাইল জায়গা জুড়িয়া আছে। কেহ বলিতে লাগিলেন, বৃহস্পতির বাষ্প জমাট হইয়া তরল হইয়া যাইতেছে, জিনিসটা তাহার উপরকার একটা দ্বীপ। কেহ বলিলেন, সূর্য্যের বাষ্প-মণ্ডলে যেমন ঝড় হয়, বৃহস্পতিতেও সেই রকম ঝড় হয়, ঐ প্রকাণ্ড দাগটি সেই ঝড়েরই চিহ্ন। এই প্রকারে অনেকে অনেক কথাই বলিতে লাগিলেন, কিন্তু সত্য ব্যাপারটি যে কি, তাহা জানা গেল না। আজও বৃহস্পতির গায়ে ঐ দাগ দেখা যায়, কিন্তু গত কয়েক বৎসরে উহার রঙ্ বদলাইয়া গিয়াছে। প্রথমে উহাকে লাল দেখা গিয়াছিল, এখন সাদা হইয়া পড়িয়াছে। এই পরিবর্ত্তন দেখিয়া মনে হয়, আর কয়েক বৎসর পরে হয় ত উহাকে আর দেখাই যাইবে না।

 বৃহস্পতি-সম্বন্ধে যাহা আমাদের জানা আছে, একে একে তাহার প্রায় সবগুলিই তোমাদিগকে বলিলাম। কিন্তু উহাতে অজানা বিষয় এখনো অনেক আছে। নিজের বৃহৎ দেহটিকে মেঘের আবরণে