পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৫৪
গ্রহ-নক্ষত্র

দেখিতেছিলেন, দূরবীণে তাহাকে বেশ বড় দেখাইল। তিনি আকাশের মানচিত্র খুলিলেন, পাঁজি খুলিয়া দেখিতে লাগিলেন, কিন্তু আকাশে সেই অংশে যে কোনো গ্রহ থাকিতে পারে, একথা কোনোখানে লেখা দেখিলেন না। হার্সেল্ মনে মনে ভাবিতে লাগিলেন, তাহা হইলে এই নক্ষত্রটি কি একটি গ্রহ? গ্রহেরা দিবারাত্রি সূর্য্যের চারিদিকে ঘুরিয়া বেড়ায় এবং নক্ষত্রেরা স্থির হইয়া আকাশে দাঁড়াইয়া থাকে। নূতন নক্ষত্রটি নড়িয়া-চড়িয়া বেড়ায় কিনা দেখিবার জন্য দুই ভাই-বোনে রাত্রির পর রাত্রি জাগিয়া আকাশ-পানে তাকাইয়া রহিলেন। তাঁহাদের আহার নিদ্রা বন্ধ হইয়া গেল। কয়েক দিন পরে দেখা গেল, সেটি এক একটু চলিয়া ফিরিয়া বেড়াইতেছে। হার্সেল্ ইহা দেখিয়া আরো অবাক্ হইয়া গেলেন।

 এই রকমের একটা বড় আবিষ্কারের খবর ত আর চাপা দিয়া রাখা যায় না। হার্সেল্ দেশের বড় বড় জ্যোতিষীদের কাছে খবর দিলেন যে, একটা নূতন গ্রহের আবিষ্কার হইয়াছে।

 হার্সেল্ তখনো বড় লোক হন নাই, গান-বাজনা করাই তাঁর তখনো ব্যবসায় ছিল। এই রকম একটা লোকের কথায় কি কেহ কখনো বিশ্বাস করে? তাই অনেকেই তাঁহার কথায় বিশ্বাস করিলেন না। কেবল দুই-একজন জ্যোতিষী মজা দেখিবার জন্য তাঁহার কাছে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। হার্সেল্ কড়া-ক্রান্তি পর্য্যন্ত হিসাব করিয়া তাঁহাদিগকে নূতন গ্রহ দেখাইলেন। তাঁহাদের মুখ গম্ভীর হইয়া পড়িল এবং সকলেই বুঝিলেন, ইহা একটা নূতন গ্রহই বটে!

 পর দিন ভোর হইতে না হইতে দেশ-বিদেশে খবর গোল, ইংলণ্ডের একজন সঙ্গীত-শিক্ষক একটি নূতন গ্রহের আবিষ্কার করিয়াছেন। পৃথিবী সুদ্ধ লোক অবাক্ হইয়া গেল। ইংলণ্ডের তখনকার রাজা তৃতীয় জর্জ হার্সেল্‌কে রাজবাড়ীতে ডাকাইয়া দূরবীণ দিয়া নূতন