পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
উল্কাপিণ্ড
১৯৩

উল্কাবৃষ্টি দেখিতে পান নাই। ইংরাজি ১৮৭২ সালের ঐ তারিখে আকাশের এক নির্দ্দিষ্ট অংশ (এন্‌ড্রোমিডা-মণ্ডল) হইতে হঠাৎ অবিরাম উল্কাবৃষ্টি হইতে দেখিয়া তাঁহারা অবাক্ হইয়া গিয়াছিলেন। কোনো একটা আশ্চর্য্য ঘটনা দেখিলে আমরা যেমন তাহাতে অবাক্ হই এবং কয়েক দিনের মধ্যে তাহার কথা ভুলিয়া যাই, বৈজ্ঞানিকেরা কোনো ঘটনাকে দেখিয়া সে রকমে ভুলিয়া যান না। তাঁহারা কারণ আবিষ্কার করিবার জন্য চেষ্টা করেন এবং যত দিন ঠিক্ কারণটি জানা না যায়, তত দিন তাঁহারা নিশ্চিন্ত থাকিতে পারেন না। ২৭শে নভেম্বরের উল্কাবৃষ্টি দেখিয়া জ্যোতিষীরা নিশ্চিন্ত থাকিতে পারেন নাই। কি কারণে হঠাৎ এই ব্যাপারটি ঘটিল, ছোট বড় অনেক জ্যোতিষীই তাহার অনুসন্ধান আরম্ভ করিয়াছিলেন।

 বায়েলার ধূমকেতুর কথা বোধ হয় তোমাদের মনে আছে। সূর্য্যের রাজ্যে আসিয়া তাহার লাঞ্ছনার সীমা ছিল না। তাহার লেজ ছিঁড়িয়া গিয়াছিল, তাহার মুণ্ড ভাঙিয়া দু’খানা হইয়াছিল; এবং শেষে ১৮৫৭ সালে সূর্য্য ও গ্রহদের টানে তাহার দেহটি পর্য্যন্ত গুঁড়া হইয়াছিল। এই ধূমকেতুটি কোন্ পথ দিয়া সূর্য্যকে ঘুরিয়া আসিত, তাহা জ্যোতিষীদের জানা ছিল। হিসাব করিতে করিতে তাঁহারা দেখিতে পাইলেন, নির্দ্দিষ্ট পথে ঘুরিতে ঘুরিতে পৃথিবী প্রতি বৎসরের ২৭শে নভেম্বর তারিখে বায়েলার ধূমকেতুর পথ ভেদ করিয়া চলিয়া যায়। ইহা দেখিয়াই এখন জ্যোতিষীরা বলিতে আরম্ভ করিয়াছেন,—ঐ দিন যে-সকল উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর দিকে ছুটিয়া আসে, সেগুলি বায়েলারই দেহের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ। বায়েলার এখন লেজ নাই, মাথামুণ্ড নাই, অবয়ব নাই, কিন্তু তাহার সর্ব্বাঙ্গের ক্ষুদ্র অংশগুলি রাস্তায় ছড়ানো আছে। কাজেই প্রতি বৎসর ২৭শে নভেম্বর তারিখে যখন পৃথিবী তাহার প্রকাণ্ড দেহ লইয়া ঐ রাস্তার মাঝে দাঁড়ায়, তখন বায়েলার দেহের ছোট অংশগুলি