বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম প্রস্তাব । 8 (t কহিতেছে, “দেখ এ তোমার করকানিহারপীড়িত সামান্তপ্রাণ উত্তরকুরুবর্ষ নহে যে, যে কোন বিষয় সহজে আয়ত্ত করিতে চাহিবে । অনেক তেজে আসিয়াছিলে, কিন্তু আমার মূৰ্ত্তি দেখিলেত । আমার বিকট হাস্ত একবার দেখিবে ?—না, তাহা হইলে তুমি বঁচিবে না। এখন দেখ তুমি কত ক্ষুদ্র, দৰ্প দূর কর, আমার পায়ে নত হও, ভয়বিস্ময়ে নিয়ত আমাকে দর্শন ও আমার উপাসনা কর ; থাইতে দিতেছি থাও, তাহার জন্য ভাবিতে হইবে না ; কিন্তু দেখিও মাথ৷ তুলিও না।” আর্য্যগণও মাথা তুলেন নাই। * আর্য্যগণ আহার পাইলেন বটে, কিন্তু গা মেলিতে পারিলেন না ; এরূপ ভয়ে ভয়ে আহারীয় প্রাপ্তিতে মুখ কোথায় ? সৰ্ব্বদাই জড়সড়, সৰ্ব্বদাই ভীত ; বুদ্ধিশুদ্ধি বাহিরে লুপ্ত হইয়া, কুর্শের অঙ্গপ্রত্যঙ্গবৎ ভিতরে সংহৃতভাবে বড়ই আকুলিত করিতে লাগিল। চিত্তবৃত্তি বাহিরের প্রফুল্লতা হারাইয়া, তদভাবপূরণার্থে, অভ্যন্তরভাগে প্রগাঢ় চিন্তাসহ চিত্তস্তম্ভনকারী বিষয়সকলের তত্ত্বানুসন্ধানকার্য্যে রত হইতে চলিল। আর্য্যগণ অপরিচিত দেশে আসিয়া, যেন নিতান্তই অপরিচিতের ন্তায় অনুভব করিতে লাগিলেন । প্রকৃতিহস্ত সৰ্ব্বত্রই বলবান ; যে দিকে দৃষ্টিপাত করা যায়, তাহাই আয়ত্ত এবং ধারণার অতীত ; অধিকন্তু ভীতি ও বিস্ময় উৎপাদন করিয়া থাকে। রাত্রি ইহাদিগের নিকট অদৃষ্টচর অনৈসর্গিক জীবকুলের বিহারকাল ;–ভূত, প্রেত, পিশাচকুল প্রভৃতি অপদেবতাগণের অট্টহাস ও কিলি কিলি রব থাকিয়া থাকিয়া যেন অতর্কিতে শ্রবণবিবরে আসিয়া প্রবেশ করিতেছে। অরণ্যসকল ভীষণ শ্বাপদকুল ও ভীষণ দানবদেবাদির . উপরি-উক্ত কয়েক পংক্তি বোধ করি আধুনিক বঙ্গীয় সাহিত্যসিংহদিগের বোমবেটে বাঙ্গালার অমুকরণে লিখিত হইয়াছে, ইতি – বাঞ্ছারাম ।