বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুষ্কোণ Voe শ্যামল বোধ হয় আরও কিছু বলিতে যাইতেছিল, সুযোগ পাইল না। পাঞ্জাবির ডানদিকের পকেটে তার এমন জোরে টান পড়িল যে আপন হইতেই সে বসিয়া পড়িল । মালতী বলিল, চুপ করে বসে থাকুন। -কেন ? আমার যা বলবার আছে—চুপ। একটি কথা নয়। মুখ বুজে বসে থাকুন। --না বসব না । আমি যাই । -বসে থাকুন। সকলের সঙ্গে যাবেন। মালতীর চাপা গলার তীব্র ধমকে শ্যামল যেন শিথিল, নিস্তেজ গেল । তারপর রিনি। যখন সভাশেষের গান ধরিয়াছে, মেয়েরা মৃদুস্বরে নিজেদের মধ্যে কথা আরম্ভ করিয়াছে, মাদ্রাজী মেয়েটির সঙ্গে সরাসী রাজকুমারের পরিচয় করাইয়া দিল । মেয়েটির নাম রুক্মিণী, সরসীর সঙ্গে পড়িত। এখন নিজে আর পড়ে না, একটি স্কুলে মেয়েদের পড়ায় । --আপনি সুন্দর বলেছেন। রাজকুমার সবিনয়ে হাসিল । -আমি ভাবছিলাম। একজন বাঙালী ভদ্রলোক আমাদের দেশের মেয়েদের সম্বন্ধে বলবেন, এতো ভারি আশ্চৰ্য, আমাদের দেশের মেয়েদের কথা তিনি ভাল করে জানবেন কি করে ? খুব আগ্ৰহ নিয়ে তাই আপনার কথা শুনতে এসেছিলাম। ভারি খুশী হয়েছি আপনার বক্তৃতা শুনে। কেবল একটা কথা-দ্বিধা ও সঙ্কোচের ভঙ্গিতে রুক্মিণী এতক্ষণ ইতস্ততঃ করিল যে রাজকুমারের মনে হইল কথাটা বুঝি শেষ পর্যন্ত না বলাই সে ঠিক করিয়াছে, একটা কথা জিজ্ঞাসা করি আপনাকে । আচ্ছা, মাদ্রাজের দু’চার জন মেয়েও কি বাংলার কঁাচের নলের মেয়েদের -মানে, যারা খুব এগিয়ে গেছেন তাদের সমান হতে পারেন নি ?