পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ved চতুষ্কোশ এবং কোথাও যাইবার কথা ভাবিতে না পারিয়া রাজকুমার ফিরিয়া গেল নিজের ঘরে । আবার কি মাথা ধরিয়াছে তার ? কেমন একটা ভোতা যন্ত্রণা বোধ হইতেছে মাথার মধ্যে । চারকোণা ঘরের বাতাস যেন চারিদিক হইতে মাথায় তার চাপ দিতেছে। রাজকুমার মালতীকে পড়াইতেছিল। সারাদিন অবিরাম বর্ষণের পর বৃষ্টি থামিয়াছিল সন্ধ্যার একটু আগে, কিন্তু মেঘ তখনও আকাশ ঢাকিয়া চারিদিক অন্ধকার করিয়া রাখিয়াছিল। যে কোন মুহূর্তে আবার ঝমাঝাম ধারাপাত শুরু হইয়া যাইতে পারে। প্ৰথমে মালতী ভাবিয়াছিল, আজ কি রাজকুমার এই বৃষ্টি মাথায় করিয়া তাকে পড়াইতে আসিবে ? তারপর আবার তার মনে হইয়াছিল, পড়াইতে যে রকম ভালবাসে রাজকুমার, যতটুকু সময়ের জন্যই হোক বৃষ্টিটাও যখন থামিয়াছে, হয় তো সে আসিতেও পারে! তাই, রাজকুমার আসিবে কি আসিবে না ঠিক না থাকায় দুপুরের গুমোটের স্বেদে আত্মগ্রানিময় শরীরটিকে সযত্ন প্রসাধনে একটু চাঙ্গা করিয়া তুলিয়া পড়ার জন্য প্ৰস্তুত হইয়াই সে অপেক্ষা করিতেছিল। না আসে রাজকুমার নাই আসিবে। যদি আসেরাজকুমার আসিল এবং কোন রকম ভূমিকা না করিয়াই পড়াইতে আরম্ভ করিয়া দিল। কেবল পড়িতে নয়, পড়াইতেও সে খুব পটু ৷ মানুষের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় অনেক সময় কথার অভাবে তাকে মুক হইয়া থাকিতে হয়। কিন্তু আলাপ আলোচনার উপরের স্তরের চিন্তাগুলিকে খুব সহজেই শব্দের রূপান্তর দিতে পারে। কোন বিষয় ব্যাখ্যা করিয়া বুঝাইবার সময় সে মশগুল হইয়া যায়। পড়ার সময় মালতীও কোন রকম দুষ্টামি করে না । ইচ্ছাও হয়