বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&S চতুষ্কোণ একমুহূর্তে রাজকুমার যেন নিজেকে ফিরিয়া পাইল- কি ছেলেমানুষীই এতক্ষণ সে করিয়াছে এই ছেলেমানুষের সঙ্গে ! জীবনের কেনাবেচার হাটে যাকে শুধু খেলনা দিয়া ভুলানো যায়, তার সঙ্গে এত সাবধানতার সঙ্গে শুরু করিয়াছে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার পণ্য নিয়া বুঝাপড়ার তর্ক। রাজকুমার একটা সিগারেট ধরাইল, কথা কহিল ধীরে ধীরে, অন্তরঙ্গ ভাবে, বন্ধুর মত । - তোমাকে একটা কথা বলি শ্যামল। মালতীকে তুমি ভালবাস। তোমার এ ভালবাসা দু’দিনের নয় নিশ্চয় ? বিয়ে না হলেও চিরদিন তুমি মালতীকে ভালবেসে যাবে নিশ্চয় ? -स्रुि- —কিন্তু জানি। তুমি বলতে চাও, তোমার কথা আলাদা । মালতীর জীবনে এতটুকু দুঃখ আনার চেয়ে মরে যাওয়া তুমি ভাল মনে কর। কারণ, তুমি যে ভালবাসো মালতীকে-টোকা দিয়া সিগারেটের ছাই ঝাড়িয়া ফেলিয়া গলার সুর বদলাইয়া- কিন্তু আমি ওকে ভালবাসি না, তাই আমার সম্বন্ধে তোমার দুর্ভাবনার সীমা নেই। তোমার মতে, ভালবাসাটা তোমার একচেটিয়া সম্পত্তি, এ জগতে আর কেউ ভালবাসতে পারে না, আর কারও ভালবাসার অধিকার নেই। -অন্ততঃ আপনার নেই ! শুনিয়া আহত বিস্ময়ে রাজকুমারের মুখে কথা ফুটিল না। শ্যামল একটু ইতস্ততঃ করিয়া আবার বলিল, আপনাকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, সে শ্রদ্ধা বজায় থাকলে মালতীর সম্বন্ধে আমার এতটুকু ভাবনা হত না । কিন্তু আপনি নিজেই আমার শ্রদ্ধা ভেঙ্গে দিয়েছেন । -সেদিন সভায় তোমায় অপদস্থ করেছিলাম বলে ? --না গিরির সঙ্গে কুৎসিত ব্যবহার করেছিলেন বলে। তারপর শ্যামল চলিয়া যাওয়ার আগে আরও যে দু’চারটি কথা বলিল, রাজকুমারের কানে গেল না। যেমন বসিয়াছিল। তেমনিভাবে