পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুষ্কোণ তাকে বোকা মনে করিতে অস্বীকার করিয়াছে, বোকামি কিন্তু সে করিয়াছে সত্যই । সায়ানাইড খাওয়ার কথা বলিলে রিনি গর্ব বোধ করিবে। আর নিছক একটা থিওরি যাচাই করিতে তার সাহায্য চাহিলে সে বোধ করিবে অপমান, এটুকু তার খেয়াল রাখা উচিত ছিল। তাছাড়া, রিনি প্ৰত্যাশা করিয়াছিল। অন্য কথা । রাজকুমার বিশ্বাস করে না রিনি তাকে ভালবাসে। তাতে কিছু আসিয়া যায় না । ভাল না বাসিলেও ভালবাসার ঘোষণা শুনিতে কে না ভালবাসে ? এদিকটাও তার খেয়াল করা উচিত ছিল। নিজের চারকোণ ঘরে চারকোণা খাটে রাজকুমার চিত হইয়া পড়িয়া থাকে। আর উত্তেজিত চিন্তা ছুটাছুটি কবে তার মনে । সিলিংএর হাত তিনেক নীচে একটা মাকড়শ শূন্যে বুলিয়া আছে, সূক্ষ্ম অবলম্বনটি চোখে পড়ে না। কিছুক্ষণ নিশ্চেষ্ট থাকিয়া উপরে উঠিতে আরম্ভ করিয়া মাকড়শাটি আরো হাত খানেক নীচে পড়িয়া যায়। রাজকুমারের ঠোঁটে হাসি ফুটিয়া ওঠে। না, দ্বিতীয় বার চেষ্টা করার চেয়ে তার ব্যর্থতাই ভাল । জীবনে আর কোন মেয়ের কাছে এ দাবি সে করিবে না । এক কাপ চা আনিয়া কালী বলে, এখন চা খেলে ভাত খাবেন। কখন ? খিদে নষ্ট হয়ে যাবে। --খিদে থাকলে তো নষ্ট হবে । --খিদে নেই কেন ? -ধরে খেয়ে এসেছি ? -ধরে খেয়ে এসেছি মানে ? খেয়ে এলে খেয়ে এসেছেন, নয়তো খেয়ে আসেন নি। কোথায় খেলেন ? কি খেলেন ? রাজকুমার মুখ গম্ভীর করিয়া বলে, একটা মেয়ে খাইয়ে দিয়েছে কালী। এত খাইয়েছে কি বলব ! পেট ভরে বুক ভরে মাথা পৰ্যন্ত VGs cite --মাথা ধরেছে ? শঙ্কিতভাবে কালী প্রশ্ন করে ।